মধুরিমা,
জানি, রাত্রির সূচনাতে সর্বদাই বেমানান থাকে
দৃষ্টি ঝলসানো কিরণমালীর উপমা;
তাইবলে কি আকাশ গুমরে রজতবালা তার নধর রুপের কারুকাজে
আমোদচ্যুত কবির সংযত হৃদয় আলোড়িত করতে পারে না?
কিংবা,
জোনাকিরা হরিৎরঙা ইশারায় মিটিমিটি করে —
আঁধারের বুকে রাজত্ব করতে আছে কি কোনো মানা?
মধুরিমা,
আমি জানি, এই পৃথিবীর মনুষ্য জীবন
পাথরে খচিত লিপির মতো অবিনাশী নয়;
কিন্তু, তাইবলে কি এ জীবন সর্বক্ষণ'ই অমরত্বের জন্য অভিলাষী নয়?
রুচিবিরুদ্ধ জেনেও
সুর, লয় হীনা গলায় দু-একটা সারি গান গাইতে
কারো ইচ্ছেটা কি ঠোঁটের ব্যাঘাতে নিরুদ্ধ হয়ে রয়?
মধুরিমা,
জানি আমি, মিহির গজানো প্রথম প্রভাতটা
নগরীর ব্যস্ততম দিনের মতো লোকসমাগমে মুখরিত নয়;
কিন্তু, তখনও কি বিহঙ্গদের সুশ্রাব্য কলরবে
প্রকৃতিপটের সব সীমাবদ্ধ নিস্তব্ধতারা প্রাণবন্ত হয়ে রয়?
স্বপ্ন আর বাস্তবচিত্র নিরবধি একই সূত্রে গ্রথিত নয় জেনেও
স্বপ্ন দেখতে কি কারো মনে জাগে
অপরাধী হওয়ার ভয়?
মধুরিমা,
আমি তাও জানি, এই ধূলির ধরায় আমার সৃষ্টিটা
তোমাকে পাবার অধিকার নিয়ে নয়;
আকস্মিক মহাদুর্ঘটনার মতোই তুমি চিরকাল
এক তীব্র বেদনা বাহিত প্রলয়...
কিন্তু, তাইবলে কি তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না?
হৃদয় মাঝে তোমাকে স্থান দিতে
আছে কি কোনো নিষেধাজ্ঞা? কিংবা — শাসন, মানা?