নদীর জলে আজও নীলে মিশে আছে একলা বিকেল,  
তবু কোলাহলে ঢেকে যায় আমার সমস্ত আহ্বান।  
সন্ধ্যার ম্লান রোদে ছায়ারা নুয়ে পড়ে ক্লান্ত,  
আর আমি নির্বিকার, ধুলো জমে যায় হৃদয়ের জানালায়।  

বাতাসে ঝরা পাতার শূন্যতা,  
তুমি কি শুনতে পাও আমার নির্বাসিত সুর?  
শহরের ইট-পাথরে শব্দহীনতার শপথ,  
আমি শুধু হারিয়ে যাই এক অভিমানী নৈঃশব্দ্যে।  

সময়ের ঢেউ বয়ে যায় অনন্ত অতলে,  
তবু কেউ ফিরে আসে না ভুলে যাওয়া পথ ধরে।  
বৃষ্টির রাতেও শুকনো থাকে আমার দু’চোখ,  
কেউ আর প্রশ্ন করে না কেন আমি উদাসীন!  

হয়তো একদিন আমিও মিশে যাবো পথের ধুলোয়,  
নিঃশব্দে, নির্বিকার… এক বেপরোয়া বাতাসের মতো!  



চাঁদের রুপালি আলোয় জেগে থাকে পুরোনো ক্ষত,  
নিশীথের গভীর স্রোতে ডুবে যায় স্মৃতির নগর।  
যে স্বপ্ন একদিন কল্পনার নীড়ে বাসা বেঁধেছিল,  
আজ তা উড়ে গেছে সময়ের নিরাসক্ত হাওয়ায়।  

আমি কি তবে এক নির্বাসিত কবির একাকী সুর?  
নাকি পুরনো ভাঙা ঘড়ির থেমে থাকা সময়?  
যেখানে সকাল আসে কিন্তু রোদ আর জ্বলে না,  
শুধু গোধূলির বিষণ্ণ আলো গলে পড়ে দেয়ালে।  

এই শহর কি জানে আমার নীরবতার গল্প?  
নাকি কোলাহলেই হারিয়ে গেছে আমার আর্তনাদ?  
যে চোখে একদিন স্বপ্নের রং লেগেছিল,  
সেখানে আজ শুধু এক বিষণ্ণ নীল আকাশ।  

আমার উদাসীনতা কি এক অনুচ্চারিত চিৎকার?  
নাকি হারিয়ে যাওয়া সুরের এক অপরূপ যন্ত্রণা?  
আমি হাঁটতে থাকি, অথচ পথের কোনো ঠিকানা নেই,  
শুধু নির্লিপ্ত ধোঁয়াশায় ডুবে যায় আমার ছায়া।  



যে রাত একদিন জ্যোৎস্নায় ভরে উঠেছিল,  
আজ সে রাত বয়ে আনে শূন্যতার বিষাদ।  
গভীর অন্ধকারে ডুবে থাকা একাকী পথিক আমি,  
যার গন্তব্য নেই, শুধু এক নির্বাসিত আকুলতা।  

বাতাস যখন বয়ে যায় স্মৃতির অরণ্যে,  
আমি তখন শব্দহীন এক নিঃসঙ্গ পালতোলা নৌকা।  
যার দিগন্ত নেই, যার তীরে ফেরার তাড়া নেই,  
শুধু এক উদাসীনতার দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেঁচে থাকা।  

শহরের ব্যস্ত সড়ক আমাকে ডাকে না,  
আমার অপেক্ষায় নেই কোনো উন্মুখ জানালা।  
শুধু ধূসর দেয়ালে লেগে থাকে পুরনো স্পর্শ,  
আর আমি নির্বিকার, এক নৈঃশব্দ্যের প্রতিমা।  

হয়তো একদিন কেউ আমায় খুঁজবে না,  
আমি মিশে যাবো বিস্মৃতির সমুদ্রের গভীরে,  
নিঃশব্দে, নির্বিকার… এক বেপরোয়া বাতাসের মতো!