রাতের নীরবতায় শব্দেরা জেগে ওঠে,
ঘুমহীন চোখের পাতায় ভিড় জমায়।
অভিমানী চাঁদ আকাশের কোণে বসে,
তাকিয়ে থাকে নির্বাক—
কেমন যেন এক দুঃখী সঙ্গীর মতো।
আমার কলম খোঁজে শব্দের আশ্রয়,
ধোঁয়ার রেখায় লেখা হয়
বৃথা প্রেমের কবিতা।
কিছু কথা কাগজে পড়ে থাকে,
কিছু কথা হারিয়ে যায় বাতাসে।
তোমার সান্নিধ্যের মতো,
কখনো কাছে, কখনো দূরে—
এই শব্দগুলোও পালিয়ে বেড়ায়।
তবু আমি বসে থাকি,
কোনো এক অদৃশ্য অপেক্ষায়।
জানি,
তোমার ছায়া আর আমার ছায়া
কখনো মিশবে না এক পথে।
তবু ছায়ার সঙ্গেই চলি,
তোমার অস্তিত্বে নিজেকে ভাসিয়ে দিই।
তোমার অনুপস্থিতি মানেই,
আমার মস্তিষ্কের নিউরনে একধরনের শূন্যতা।
সেরোটোনিন কমে আসে নিঃশব্দে,
ডোপামিনের প্রবাহে তৈরি হয় খরাপথ।
স্নায়ুকোষের মধ্যে বিষণ্নতার স্পন্দন জাগে,
আমি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাই নিজস্ব ছায়ার মাঝে।
প্রেমের গলিতে পা ফেলে দেখি—
কিছু দরজা খোলা, কিছু বন্ধ,
আর কিছু চিরকাল অপেক্ষার আড়ালে।
আমার হৃদয়ের জানালায়
সব দরজাই খোলা,
তোমার জন্য, শুধু তোমার জন্য।
আমি লিখি,
আমি মুছি,
তবু শব্দেরা ফিরে আসে
একই ব্যথা নিয়ে।
নিকোটিনের ধোঁয়া দিয়ে যতবার
তোমার নাম আঁকি বাতাসে,
মস্তিষ্কের কোষগুলো এক পলকের জন্য
কিছুটা আরাম খোঁজে।
কিন্তু জানি, এই আরাম ক্ষণিকের,
ধোঁয়া মিলিয়ে গেলে—
আমি আবার সেই শূন্যতাতেই ফিরে যাই।
শেষমেষ আমি বলে উঠি—
আমিই ছিলাম,
আমিই আছি,
আমিই থাকব চিরকাল।
এই কোষেরা জানে না বিরতির মানে,
কিছু নিউরোনের মৃত্যু হলে,
নতুন সৃষ্টি হয় না আর।
মনের আকাশে জমে ওঠে কালো মেঘ,
আমার হৃদয় বোঝে—
একদিন হয়তো নিজেকেই ভুলে যাবো।
তোমার অভাবের গহ্বরে,
তোমার স্মৃতির আলোছায়ায়,
তোমার না বলা কথার আড়ালে—
আমি রয়ে যাই।
তোমার নামের প্রতিধ্বনি হয়ে,
প্রেমহীন রাতের কবি হয়ে,
আমি থাকব চিরকাল।