দূরত্ব বাড়িয়ে বুঝলাম আমি আসলে দূরেরই ছিলাম,  
তোমার আকাশে ছিলো না আমার কোনো নীল পরিচয়,  
তোমার বাতাসে মিশে ছিলো অন্য কারো নাম,  
আমি শুধু মরীচিকা, শুধু এক ক্লান্ত অপেক্ষার সময়।  

তোমার জানালায় আলো এলে ভাবতাম আমারই জন্য,  
তোমার চিঠির প্রতিটি শব্দে খুঁজেছি নিজেকে,  
কিন্তু আমি ছিলাম শুধু এক ভুলে যাওয়া স্মরণ,  
তোমার ব্যস্ততার ছায়ায় হারিয়ে যাওয়া এক টুকরো মেঘে।  

দূরত্ব বাড়িয়ে বুঝলাম, কাছে ছিলামই না কোনোদিন,  
তোমার শহরের পথে পথে আমি শুধু এক ছায়া,  
তোমার সন্ধ্যার গানে নেই আমার অস্তিত্ব,  
তোমার বুকের ভিড়ে আমি নীরব এক নির্জন মায়া।  

তবু কী সহজে ভেবেছিলাম তুমি আমারই ছিলে!  
তোমার রাতের স্বপ্নেও কি ছিলো আমার ঠাঁই?  
আমি বোকার মতো শব্দ সাজিয়েছি কবিতায়,  
তুমি নির্বিকার, ভাসিয়েছো ভালোবাসা অন্য কারো ঠোঁটের ঠাঁই।  

এখন দূরত্বের দেয়ালে চোখ রেখে বুঝি,  
আমি আসলে দূরেরই ছিলাম, থাকবোও চিরকাল,  
তোমার দিগন্তে আমি কেবল এক বিস্মৃত গল্প,  
ভুলে যাওয়া চিঠি, অচেনা এক অশ্রুজল।  

তোমার হাতের স্পর্শ তো কোনোদিন পাইনি,  
তবু কেনো এ হৃদয় তোমারই ধ্বনি শোনে?  
তোমার ছোঁয়া ছাড়াই কেনো কাঁপে আমার হৃদয়?  
তুমি কি জানো, আমি কতবার তোমার ছায়া ছুঁয়ে কেঁদেছি?  

বৃষ্টি এলেই ভাবতাম, তুমি হয়তো ডাকবে,  
তোমার চোখের জল ভেবে ভিজতাম নীরবে,  
শুধু বুঝিনি, সে জল কেবল মেঘেরই কান্না,  
তোমার মনে তো কোনোদিন ছিল না আমার গল্প।  

তোমার হাসির ভিড়ে আমি ছিলাম নির্বাক,  
তুমি আলো ছুঁয়ে হাঁটতে, আমি থাকতাম অন্ধকারে,  
তোমার প্রতিটা গান ছিলো কারো নাম লেখা,  
আমি শুধু শ্রোতা, এক বোবা দর্শকের মতো।  

তুমি কী জানো, আমি আজও আকাশে তাকাই?  
সেই চাঁদটাকে দেখি, যেটা তুমি ভালোবাসতে,  
আমি আজও রাতের বাতাসে শুনি তোমার গলা,  
যদিও জানি, সে কেবলই এক স্মৃতির প্রতারণা।  

তোমার শহরের বাতাসে আজও গন্ধ পাই,  
তোমার চিঠির শব্দেরা আজও হৃদয়ে বাজে,  
কিন্তু জানি, তুমি আর কখনো ফিরে আসবে না,  
আমি কেবল দূরেরই, দূরেই থাকব চিরকাল।