স্বপ্ন ছিল সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্তান হবো
মা বললেন, যেন বাবার মতো হই
আর বাবা বলেছিল বিদ্যাসাগর হতে,
মাস্টারমশাই বললেন- তুইতো সুভাষ হবি!
বড় হয়ে আমি হলাম উড়নচণ্ডী
আর বাবা হলেন সংসারী, আগের মতোই।
তারপর কতবার স্কুল পালিয়ে ভেবেছি
এবার নজরুল'তো হবোই, নয়তো সুকান্ত,
গাঁয়ের এপাড়া ওপাড়া ঘুরে এসে সন্ধ্যায়
পড়ার টেবিলে মনযোগ হারানো আমি
নির্বিঘ্নে হয়ে যেতাম জীবনানন্দ দাশ।
এভাবেই একদিন রবি ঠাকুরের ফটিক' হলাম,
এক অজপাড়াগাঁয়ে পোস্টমাস্টার হতে গিয়ে
রতনের জন্য কিশোর মনের কী ব্যাকুলতা!
অতপর শ্রীকান্ত'র সাথে যেইনা হলো দেখা
শরৎ বাবু'ই হলো আমার নিত্য সহচর -
রাজলক্ষ্মী'র ধ্রুপদী প্রেম, ইন্দ্র'র শৈল্পিক মাছ চুরি
অন্নদা দি'র স্নেহময় শাসন, অভয়া'র দুঃখ-গাঁথা
কত কী দেখে দেখে একদিন নিজেই দেবদাস।
অবশেষে স্বপ্নের মুখে ছাই, এবার তীর্থ স্নান
কাঁপা হাতে মঙ্গল দীপ জ্বেলে দীপান্বিতা এসে
আস্তাকুঁড়ে খুঁজে পেল এক অমৃত সরোবর;
স্বপ্নচূড়ায় ভর করা তার পানকৌড়ির সুখ
ম্লান হতে হতে অযাচিত অসন্তোষে চৌচির,
বেলা শেষে ঘরে ফিরে দেখি একফালি স্বপ্ন
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে দুরারোহ সংসার,
এখনো ঘুমের ঘোরে 'সিদ্ধার্থ' এসে
ভীড় করে স্বপ্ন ডানায়-
নির্বাণেই পরিত্রাণ খুঁজি বিবাগী বাসনায়।
----------------------------