বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে
বরুণার মতো তুমিও ভেবেছিলে
একদিন আমার বুকেও আতরের গন্ধ হবে!
ভালোবাসার কষ্টগুলো লুকিয়ে রেখে
রুমালে মাখা সুগন্ধিটা হারিয়ে ফেলেছি,
সুনীলের বইয়ের ভাঁজে তন্নতন্ন করে খুঁজেছি
একশো আটটা নীল পদ্ম,
দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে লাল কাপড় বেঁধে
চৌধুরীদের গেটে রাতভর দাঁড়িয়ে দেখেছি
তোমার দু'চোখে ঘোর অমাবস্যা।

শুক্লা দ্বাদশীর কতো রাত পার হয়ে গেল
সঞ্চারীও ভুলে গেছি পঁচিশ বছর হলো,
নানাবাড়ির মাঝিকে বলেছিলাম
আমাকে বিলের জোছনায় সাঁতার শেখাতে
সে এখন মুখুজ্জে বাড়ির নতুন মালিক!
অদুরে পানের পিক ফেলে ক্রুদ্ধ দৃষ্টি হেনে
ছেলেবেলার কথা ভুলে যেতে বললো।

চৈত্রের খা খা রৌদ্রে পুড়তে পুড়তে
শ্রাবণের অঝোর ধারায় ভিজতে ভিজতে
আমিও সেই বোষ্টমীর মতো পথচলা শিখেছি,
কাঠকয়লার আগুনে করতল মেলে ধরি
হৃদয়ে চেপে রাখি পোড়াবাড়ির ইট-পাথর
আকাশ পানে চেয়ে থাকি অহর্নিশি
পদ্মফুলের মাথায় খুঁজি কার মুখচ্ছবি!
সে আমার বিষন্ন ভোরের নিস্তব্ধতা
দুপুরের মিষ্টি কোলাহল, বিকেলের পড়ন্ত রোদ
রাতের স্নিগ্ধতা ছড়ানো মায়াবী চাদর,
সে-ই আমার বিমূর্ত ভালোবাসা
কথা রেখেছিল তেত্রিশ বছর পর।

-----------------------------