সে গাঁয়ে এখন নাকি বৃষ্টি থেমে গেছে
শস্যক্ষেত গুলো নুয়ে পড়েছে পুষ্ট দানায়
পোকামাকড়েরা ঘর ছেড়েছে নিরুদ্দেশে
সজনে গাছের ডালে বাঁধা কাকের বাসাটি
কে বা কারা ভেঙে দিয়েছে, কেউ জানেনা
সে গাঁয়ের ঝিলের পাড়ে তোমার নতুন বাড়ি।
তুমি এখন কেমন আছো দুঃখ পোষা মেয়ে!
নাড়িছেঁড়া ধন ছেড়ে অনন্ত সুখের খোঁজে
পথ হারালে অন্য গাঁয়ে, ছাড়লে আপন ঘর
অবশেষে বাবা-র সাথেই স্মৃতির সংসার
কাটছে কাটুক নিত্যদিনের তোমার শেষ প্রহর।
ও গাঁয়ের সুখপাখিরা দেখতে কেমন?
ভালোবাসায় বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দিও
বিষের অসুখ সুখপাখিদের বড়োই প্রিয়,
এখনও কি বাবা'ই তোমার কাছের মানুষ?
তাঁকেই বেশি ভালোবাসো আমার চেয়েও!
এ গাঁয়ে এখনও শরতের মেঘে বৃষ্টি ঝরে
বাড়ির আঙিনায় জোয়ারের হাঁটু পানি
ঝিলের জলে মাছেদের স্বাধীন সাঁতার,
এ গাঁয়ের পাখিরা এখনও ফিরে আসে নীড়ে
এখনও কিশোর-কিশোরীরা দলবেঁধে
চাঁদের আলোয় কানামাছি খেলা করে।
এ গাঁয়ের দুরন্ত কিশোর পাঠশালা পালিয়ে
এখনও ভাসায় ভেলা শালুকের বিলে
কিশোরীরা ডিঙা বায় আষাঢ়ের জলে,
বয়সী কিষাণ সুখটান দিয়ে হিসেব কষে
আমনের ফলন বেচেই এবার ঋণ শোধ দেবে,
এ গাঁয়ের কিষাণীরা বড্ড বোকা, তোমার মতোই
গোলায় শস্য দানা গুনে গুনে স্বপ্ন বোনে
এই অঘ্রাণে একটি নাকফুল হবে তাঁর।
আমিও সুবোধ বালকের মতো নির্দ্বিধায়
মহাকাল পেরিয়ে সেই অনন্ত গাঁয়ে যাবো
তুমি সেইদিন অবধি জেগে থেকো মা!
কই মাছের অল্প ঝোলে দুটো লাউয়ের ডগা
না হয় নারকেলের দুধে চিংড়ির বড়া
নয়তো কলাপাতায় সর্ষে-পুঁটির চচ্চড়ি
আর পাট শাক দিয়ে ঘন ডাল রেঁধে
অমৃত শৈশব ফিরিয়ে দিও প্রশান্তির ঠিকানায়।
--------------------------------