গল্প শুনে শুনে ছেলেটি এবার বায়না ধরেছে
কল্পনা নয় সত্যি সত্যি ক্রীতদাস দেখবে সে
এবার জন্মদিনে ক্ষুদ্র চাওয়া তার,
পৃথিবীর বিখ্যাত পরিচালকের সব চলচিত্র
বরেণ্য লেখকদের ইতিহাসের সব বই
একে একে ঠাঁই পেল তার পড়ার ঘরে;
ছেলে তাঁর নিশ্চিত বিদ্বান হবে ভেবে
গর্বিত বাবার হৃদয় প্রসন্ন হলো।
ছেলেটি ইতিহাসের বই পড়ে, চলচ্চিত্র দেখে
কল্পনার জগতে ভেসে ভেসে পায়না খুঁজে
সত্যিকারের ক্রীতদাসের ঠিকানা।
এভাবেই কল্পনার দোলায় দোল খেতে খেতে
ছেলেটির জন্মদিন ফিরে এলো -
মা-বাবা প্রসন্ন চিত্তে আশীর্বাদ করে বললেন
ভুলে গেছিস খোকা? আজ ৪ঠা এপ্রিল!
তোর জন্মদিন, অনেক বড় হবি একদিন।
ছেলেটির ভ্রূক্ষেপ নেই কারো কথায়-
শুধু দু'চোখ বেয়ে বয়ে চলে জলের অনল
বিস্ফারিত চোখ জোড়া নির্নিমেষ চেয়ে রয়
দেয়াল জুড়ে ঝুলে থাকা টিভির পর্দায়।
সজল চোখে ছেলেটি তার বাবাকে শুধালোঃ
ঐ দ্যাখো জীবন্ত ক্রীতদাস! ভাসছে পদ্মায়-
নীরব শহরে তার শান্ত মিছিল-শিকল বিহীন,
ফুটপাত জুড়ে কী সুশৃঙ্খল হেঁটে চলা
ট্রাকের পাটাতনে ক্ষুধার্ত শরীরের ভগ্নস্তূপ
পিপিলিকার মতো ছুটে চলে আহারের ঠিকানায়।
সহসা কী মনে হতেই ছেলেটি বন্ধ করে দেয়
টিভির চ্যানেল, কে জানে- এইসব দৃশ্য দেখে
সেইসব বাবাদের মতো তার বাবাও
যদি হঠাৎ বলে ওঠে "বাঃ কী মনোরম!"