(কবি তসলিমা নাসরিন কে)
দিদি আমায় চিনতে পেরেছো?
আমি সুরঞ্জন, আহা চিনলে না!
সেই সুরঞ্জন, পুরান ঢাকায় ছিলাম আমরা
মনে পড়ে সে সব কথা?
চিনবেই বা কেমন করে, এতটা দিন পরে।
ভুলে গ্যাছো নিশ্চয়ই, দেখা হয়েছিল
সেই যে সেবার, বইমেলায়-কোলকাতাতেই
কত কথা বললে তুমি-
ঢাকার খবর, দেশের খবর....
সত্যি বলো, এখন তোমার সেসব কথা
পড়ছে না আর মনে?
এমন ক'রে চেয়ে আছো- ভুত দেখেছো যেন,
আরে আমি সুরঞ্জন! মাইরি বলছি
ভুত নইকো কোন।
আমার মুখে 'মাইরি' শুনেই
দিদির ঠোঁটের কোণে
এক চিলতে হাসির ঝিলিক, তুচ্ছ দৃষ্টি হেনে
বললো এবার-"ওঃ আমি ভাবলাম
তুমি আমার দেশের কেউ হবে"।
বলেই দিদি হারিয়ে গেল ভীড় যেদিকে বেশি,
আমিই কেবল ঠায় দাড়িয়ে
মেলার মাঝে, নিজের কাজে-
"লাগবে নাকি বাদাম ভাজা....!
নিতে পারেন যার যা খুশি......"
বলতে বলতে পঁচিশ বছর
এক প্রজন্ম সময়,
এতদিনের মলিন স্মৃতির
বোঝা কে আর বয়।
দিদির চোখে চশমা এখন
চুলে সাদার ঝিলিক,
আগের মতন আছে কেবল
ললাট মাঝে টিপ।
এক নিমিষেই দিদি যদি আমায় চিনে নিতো,
কী আর এমন হ'তো?
হাতটি ধরে আমায় কী আর নিয়ে যেত
বাঙলাদেশে - আমার বাড়ি!