আকাশের ব্যালকনি তবুও অস্পষ্ট
নিরন্তর দৃষ্টির পথে নীল নীল অনামিকা
আমার কোলে বাতাসের সবটুকু ঢেউ
সীমান্ত পেরোনো আত্মায়
কপর্দকহীনতার বিমূর্ত ব্রাশ-স্ট্রোক
সম্প্রসারিত বাহুর অন্তিমে আঙুলের পেলব শাখা
মেঘের বিছানায় আলতার মেদুর প্রলেপে
মন মেখে যায় আমার মন মেখে যায়
প্যারাবোলিক আকাশে কাঁঠালচাপার নায়ৈর
অদৃশ্য সুরভিতে সমস্ত আকাশ উন্মাতাল...
আমার আকাশী পাখী হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার আকাশ হতে ইচ্ছে হয়েছে....
নীলাঞ্জনা দিগন্তের কাছে চেয়েছি
আকাশকে আরও আরও একটু কাছে
সফেদ শার্টের বোতামের মত
ধার ঘেসে তার প্রুশ্যিয়ান ব্লু লেগুনে ডুব সাঁতার
চোখের আগেই সমুদ্রের হাড়-হা-ভাতে ঢেউয়ে
ম্লানমুখী কচ্ছপের যেখানে অলস হামগুড়ি
এবং এ্যালব্যাট্র্যসের সাথে তরঙ্গিত কাঁচরঙা বায়ূকেলি
জলীয় আনন্দে থেকে থেকে কিছু পেলিক্যান চিৎকার
ঝিনুকের অনাবৃত মাখনি বুকে
আলতো বালিকনার নির্মম আশ্রয়
আমার প্রুশ্যিয়ান ব্লু লেগুন হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার সামুদ্রিক পাখী হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার সমুদ্র হতে ইচ্ছে হয়েছে...
বালির কণায় কণায় লোনা জলের তৃষ্ণায়
ঝড়ে গড়িয়ে আসা আকাশমণির ভাঙা গুড়িতে
কীভাবে কত প্রকারে ও মাত্রায়
মেইনল্যান্ডের তাবৎ যন্ত্রণা জড়িয়ে থাকে
ভেজা বাতাসে্র সৈকতে কালচে সবুজ ঝাউবনে
আমার ইচ্ছের একের পর এক গ্র্যাফিটি
সাত সমুদ্রের স্তরিত উভমুখী জলবায়ূটান
স্নিঘ্ন অপাপবিদ্ধ অতীতকে
ভবিষত্যের টানেলে হত্যা করে
আমার লোনা জল হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার ভেজা বাতাসের সৈকত হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার সৈকত হতে ইচ্ছে হয়েছে...
সর্ষে ক্ষেতের উপর দিয়ে বাতাস বইছে
মাটির পথের কিনারায় একলা দাঁড়ানো
হিজল গাছে সে বাতাসের সম্পূরক ঝাপটা
আমার চোখ সর্ষে ক্ষেতের আইল দিয়ে
অকুঞ্চিত-ভ্রু নিমগ্ন যোগীর মত হেঁটে চলেছে
আমার বুকে'ও কি সেই সর্ষে ক্ষেতের বাতাস !
এক জীবনের নানাবিধ জঞ্জাল সরিয়ে
ক্রমে ক্রমেই বুকের উঠোন
বসরাই গোলাপের বাগান ক'রে তুলছে !
আমার সর্ষে ক্ষেতের বাতাস হতে ইচ্ছে হয়েছে...
আমার বাতাস হতে ইচ্ছে হয়েছে...
কয়েকটা মখমলি প্রজাপতি
ক্ষণেক পর পর এ ফুল ও ফুল বসছে
ফুলের পাপড়িতে যেন রঙের উৎসব
আরও আরও যেন মাতাল মেদুর ফেরোম্যনে
বিশ্বপ্রকৃতি আনন্দ প্লাবনে ভাসছে...
আরও আরও বাসন্তী অর্গ্যাজমিক জোয়ার
ভরত ছন্দিত হার্ট শ্যেপড কাগজি পাখায়
ছিঁটে ফোঁটা যেন মিহিন ঝিরঝিরে পরাগরেনু
চিত্রিত ক'রে দিলো অন্তস্থঃ সুখের ক্যানভাস
আমার মখমলি প্রজাপতি হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার প্রজাপতি হতে ইচ্ছে হয়েছে...
বিকেলের ক্লান্ত সূর্যালোকে জানালার শার্শি দিয়ে
নীড় ফিরতি যে পাখি উড়ে যায়
আমি যেন তার পালকের রঙ মাখি
যে পালকের খাতায় স্বযত্নে মুদ্রিত
কমলা-বেগুনি গোধূলির যত ইতিহাস
জুনের কিছু বৃষ্টি ঝিলিমিলি রোদের জলছাপে
আমার যুগান্তরের স্মৃতি মলিন হয়ে যায়
এই মেঘ এই বৃষ্টি এই রোদ পান ক'রে...
আমার বিকেলের সূর্যালোক হতে ইচ্ছে হয়েছে
আমার সূর্য হতে ইচ্ছে হয়েছে...
আমার কমলা-বেগুনি গোধূলি হতে ইচ্ছে হয়েছে
প্রাণে আমার প্রণোদিত যত উল্লাস উচ্ছাস
শেষ প্রহরের আগেই সে সবের নির্মুক্তির ইচ্ছে হয়েছে...
_______________________________
"তুমি সেই অন্তহীন স্তব্ধতায় শব্দরাশি মুক্ত করে দাও প্রিয়মুখ
তুমি সেই বৃষ্টিধোয়া নিরুচ্চার শব্দগুলো চালচিত্র করে দাও
জীবনে আমার
টুং টাং বেজে যাক অশ্রুত শব্দের কথামালা
অপেক্ষার, প্রতিক্ষার টুকরো টুকরো যতো উন্মীলন
বাগ্ময় হয়ে উঠে আমাকে কাঁদায় যেন..."
⌠'যেন বলে ওঠে' | আরণ্যক বসু⌡
_______________________________________
দ্রষ্টব্যঃ কপিরাইটের জন্য এখানে প্রকাশিত প্রতিটি সাহিত্যকর্মই আংশিক আকারে প্রদর্শিত
N.B.: Some stanzas here have been masked to avoid copyright infringement
[ Copyright © 2023 | Anwar Parvez Nur Shishir – All Rights Strictly Reserved ]