সরকার, আমার নাম জেনে কি করবে তুমি?
পরিচয়টা দিচ্ছি শোনো-
আমি আলপাড়া গ্রামের শ্রমিকের মেয়ে;
এক চিলতে ভিটে তে মাথা গুঁজতাম ছয়।
বাবার কারখানা হলো বন্ধ ,
মা নামলো দিনমজুরিতে
সরকার, তোমার দেয়া টাকায়
ভাগ বসাতো দালাল; সে তুমি নিশ্চয়ই জানতে-
না হলে আজও সে প্রথা কি করে চলে আসছে?

শুনেছি সরকাররা হয় গরীবের-
ঠিক ই - তোমার দেয়া দু টাকার চাল খেয়ে
বড় হয়ে গেলাম; কিন্তু আমার বাপ আধপেটা খেয়ে
গলায় দিলে দড়ি ;
না না সরকার- তুমি দায়ী নয়-
তুমি হাজারো হাজারো শ্রমিকের ভার
কি করে তুলবে মাথায় ?
তবে বলতে পারো, আমার মার
কেন জুটতো না একটাও নতুন শাড়ী ?
কেন আমার সহোদরার ১৮ র আগেই
ধার করা টাকায় হলো বিয়ে ?
কেন আমায় বারংবার ব্যর্থ হতে হলো
সরকারি আমলার পরীক্ষায়, যখন
আমি ভালো মেয়ের তালিকাতেই পড়েছি চিরকাল?

না না সরকার, তোমায় আমি দুষছি না-
তোমার আছে অনেক হিসাব নিকাশ;
আছে সম্মান, সমানতার অঙ্গীকার, বিজয় চিন্তা।
তাই, আজও আমার গ্রামের স্কুলে তোমার দয়ায়
শিশু গুলো যখন ভরপেট খায়, প্রার্থনা করি,
যেন তাদের রাতের খাবার জোটে-
যেন তাদের বাবাকে মরতে না হয় অসময়ে
যেন তারা সমানাধিকার পায় যোগ্যতা প্রমাণের চিরকাল-
কারণ তাদের একটাই জাত- অভাবী।

সরকার, তোমার দয়া চাই না-
চাইনা ঘুষ খোরের দল-
চাইনা দানের টাকায় তছরুপ-
চাইনা জাতের দোহাই দিয়ে বিভাজন-
চাই শ্রম দানের পথ- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নীল আকাশ-
চাই সত্তর বছরের পুরোনো মাটিতে
সততা, শান্তি, জল, শস্য, বিজলি;
যেন কেউ অন্ধকারের দমবন্ধ খুপরিতে অভাবে না মরে-
সরকার-আমরা জানি মাথা উঁচু করে বাঁচতে-
বন্ধ হোক অভাবী জাতের ভাগাভাগি ।  

দীর্ঘ বারো বছরের প্রচেষ্টায়,
আজ আমি আমলার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ-
শুনছ  সরকার, আমি আসছি ;
আসছি রক্ত বীজের অসুর দমনে-
নাম দুর্গা- হ্যা- ঠিক শুনেছ,
আরো সহস্র দুর্গা চাই সাথে-
দুর্গার কোনো পদবী নেই-
পদবী হয় না;
তাদের একটাই জাত।


@অপরাজিতা