গগনচুম্বী হিমালয়ে সূর্যাস্ত দেখে
প্রশ্ন করলাম
শিবের নৃত্য কি রাতে যায় দেখা ?
যখন কাঠের আগুনে উত্তাপ নিয়ে
সে ছাই মাখা শরীর, ডমরুর তালে উন্মত্ত নাচে
আর সমস্ত গরল তার কাছে হয় নত?

তুমি বলেছিলে, শিবের নৃত্য বুজরুকি,
তোমায় আমি এমন নৃত্য দেখাব
যেখানে থাকবে সত্য -
তোমার  চোখ হবে বিস্ফারিত-
সে হবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান ;
আমি অবাক কণ্ঠে বলেছিলাম- দেখিও ।

রাতের আকাশ দেখে
প্রশ্ন করলাম-
এ কি স্বর্গ ? কালো ঝলমল ,
যেন হীরে মানিক মোড়া
তাঁর গা;
এ আকাশ গঙ্গায় কি হব পথ হারা  ?

তুমি হেসে বলেছিলে, এ সব অলীক-
তোমায় আমি এমন  হীরে দেব
যা হবে শ্রেষ্ঠ - সে হীরে
তোমায় করবে রানী-
আমি অবাক নয়নে চেয়েছিলাম তখন
আকাশ পানে !

পাইন ফার আর রডডেন্ড্রন এ হারিয়ে
প্রশ্ন করেছিলাম -
আমি যদি হালকা বাতাস হয়ে
গাছের পাতায় নাচতাম
আর নদীর তালে খেলতাম-
খুঁজে পেতে আমায়?

তুমি সে প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলে-
তুমি কি কবি?
এ সব কল্পনায় ভরে থাকো দিবা রাত?
তোমায়  আমি হারিয়ে যাবার
অবকাশই দেব না-  আমি চুপ করে
শুনেছিলাম তোমার অঙ্গীকার।  


জীবনটা নিমেষের মত গেল ফুরিয়ে-
অবকাশ পেলাম কোথায় হারিয়ে যেতে?
না দেখলাম শিবের নৃত্য,না হাঁটলাম নক্ষত্র খচিত স্বর্গে,
না হারালাম সবুজ বনানীতে-বাতাস হয়ে ।  
জাগতিক আনন্দে হারিয়েছি ক্ষণিক ।  
কিন্তু আমি তো চাইনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ অনুষ্ঠান -
হীরে মানিকে সাজতে সুন্দরী।
চেয়েছিলাম বাস্তবতায় মাঝে
অসীম কে ছুঁতে আমার কল্পনায়।
সে স্রোতে ভেসে দেখলাম কত তাণ্ডব,
সে হওয়ায় মিশে শুনলাম কত অন্ধকারের কথা,
সে নদী বোঝালো কত ঢেউয়ের গর্জন ।

জীবন শেষে এসে তোমায় প্রশ্ন করি-
আমি কি পেরেছি তোমার
শ্রেষ্ঠ সম্মেলনের সাথী হতে?
আমি কি দিয়েছি তোমায়
হীরের ঔজ্জ্বল্য?
আমি কি বাস্তবতার প্রান্তরে মুছতে পেরেছি
কল্পনার অহংকার?
সম্পূর্ণতার খেলায়  কি
বাকি রয়ে গেল কিছু তোমার?
পারো যদি ক্ষম মোরে-নিজ গুণে
যা চেয়েছি- তা নিজ সাজে পেয়েছি-
যা পাইনি- তাএ হারাইনি কিছু ।

@ অপরাজিতা