আমি তো ফকির হতে চাইনি-
তাই কৌটিল্য যেদিন হাতে ধরে
এগিয়ে দিলেন নন্দের 'পরে ,
সহস্রাধিক সৈন্য পড়লো লুটিয়ে ধরাতলে-
রক্ত স্রোতের বহ্নি যজ্ঞে হলাম রাজাধিরাজ ।

আমি তো ফকির হতে চাইনি-
চাইনি জানতে পিতৃপরিচয়-
শুনেছি রাজবংশ আমার শরীরে বয়;
মুরা  আমার মা-
অরণ্যের সঞ্চয়-


আমি তো ফকির হতে চাইনি-
সুন্দরী হেলেনাকে করি মাল্য দান,
ইতিহাস রেখেছে তার স্থান-
আবছায়ে , অগোচরে,
হয়তো ঝিলামের কিনারে।

যখন নিঃশব্দে ফিরি পাটলিপুত্র, গঙ্গা কিনারে,
কে যেন বলে ওঠে বার বার-' হে বিষপুরুষ-চেয়ে দেখ-
আমাদের রক্ত বইছে -আম্রকুঞ্জ, খাইবার, পাইনে কত -
কিন্নরী তো আমাদেরই সন্তান-
হে পুরুষ- এ তোমারই দান।
তবে, তুমি তো রাখোনি আমায় খোদাই মুদ্রায়-
বা প্রস্তর অবয়বে- বা কভু সিংহাসন পরে-
বা তোমা পাশে- শেষ নিঃশ্বাসে।'

চমকে কহি, আমি তো ফকির হতে চাইনি-
আমি রাজরাজেস্বর- রাজাধিরাজ......।
নাকি, আমি যুদ্ধে  ক্লান্ত ভারাক্রান্ত
বিষপুরুষ?
নাকি অর্ধাঙ্গীনীবৃন্দের পিতৃহত্যাকারী বা
পিতৃবিতাডনকারী ,
প্রকৃত পুরুষ?
নাকি, চুপিসারে সিংহাসন পরিত্যাগী
শ্রান্ত পুরুষ সন্ন্যাসী?
নাকি, অনাহারে জীর্ণ- শীর্ণ-
কঙ্কালসার রাজা?

তাই প্রশ্ন জাগে - আমি কে?
ফকির ? রাজাধিরাজ ? না বিষপুরুষ?
পাটলিপুত্র  অট্টহাস্য হাসে -
যে যেমন ভাবে, তেমনি সে ।

@ অপরাজিতা