শতাব্দীর প্রেতাত্মা
আনোয়ার হোসেন বাদল
------------------------
সেই তো বেশ ছিলাম, ভালো ছিলাম
অনন্ত অন্ধকার ঘিরে অনাদি জীবন
প্রেমহীন, আলোহীন
কবরের মাঝে
কেন তবে শিয়রে জ্বালিয়ে যাও
আলোর দিপালী?
আমাকে মৃত ঘোষণার পর
কেটে গেল কত যুগ, কত যুগান্তর
বেশ তো ঘুমিয়েছিলাম
অন্তহীন নি:সার এক কবরের মাঝে!
আলো দিয়ে কেন তবে
জাগালে আমায়?
পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে
কার সাধ না লয় ?
যখন আলোর প্রদীপ হাতে
রেখেছিলে পরশ এই হৃদয়ের 'পর
ভেবেছিলাম আমি বুঝি তোমাদের কেউ
বেঁচে বুঝি আছি আমি তোমাদের মাঝে
তারপর আমারই কাছে
চাও সোনার দিনার!
চকিতে তাকিয়ে দেখি মৃত আমি
অন্ধ কবর ছাড়া
কিছু নেই দিতে পারি তোমাদের হাতে
তাই যদি দেই
দু'জনের পাশাপাশি ঠাঁই মিলে কই?
শুধালাম সেকথা যখন
মিছে অভিমানে
দিপালী নিভিয়ে দিয়ে অন্যত্র করলে গমন।
বুঝলাম আমি
মৃত মানুষের শুধু অনন্ত আঁধার থাকে সাথী
আলোর পৃথিবী তার নিষিদ্ধই থাকে চিরকাল
যদিও দিপালী কেউ জ্বালায় তার
সমাধির পরে
সে অনুষ্ঠান শুধু জীবিতরা
পূন্য লভিবার লাগি করে।
স্বার্থই খোঁজে যখন পৃথিবীর সকল প্রাণ
কেন তবে করি আমি মিছে অভিমান!
শতাব্দীর প্রেতাত্মা কেন তবে
দেখা দেবে মানুষের মাঝে?
নিকষ আঁধার নিয়ে থাকুক সে
অন্ধকার মাটির গহিনে
দিপালী যদিও জ্বালো সমাধির 'পর
মন্ত্রোচ্চারণ করো তোমরা মুক্তির লাগি
এই প্রতাত্মার।
----------------------
চৌরাস্তা, পটুয়াখালী