হ্যামলিনের বাঁশির সুরে /অনুরাধা চক্রবর্ত্তী।
কাল সারারাত দুঃখগুলো কালবোশেখি হয়ে,
নেমে আসছিল আমার ঘরের খড়ের চালে;
তীব্র বাতাসের দমকায়, কতো খড় গেলো উড়ে,
খড়ের পাতলা হয়ে যাওয়া আস্তরণ দিয়ে বিদ্যুৎ
বার’বার উঁকি দিচ্ছিল আমার ছোট্টো ঘরে।
আমি সারা শরীর চাদরে ঢেকে চোখ বন্ধ করে রইলাম:
চোখ আর গাল ভিজলো বৃষ্টির জলে, বৃষ্টির জল
এতো নোনতা হতে পারে, প্রথম জানলাম কাল রাতে।
ভোরের আগেই ঝড় থেমে গ্যাছে,তবুও ঘুম নেই আমার;
বৃষ্টি হয়ে চলেছে সমানে, থেমেও থামেনি, ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ছে অবিরাম, তাই আমার আকাশে সূর্য ওঠেনি আজ। বিকালে ঘর ছেড়ে বাইরে এলাম; বৃষ্টি-স্নাত আমার বাগানের গাছ।
একটি গাছ আমার ঘরের ছাদ ছাপিয়ে অনেক
ওপরে।
কোনো বেদনা নেয় সেই গাছের পাতায় কিংবা ডালে।
কাল বোশেখের দুঃখ স্পর্শ করেনি সেই গাছ কে;
এখন বুঝলাম আমার ঘরটা ছোটো বলেই দুঃখ ভরা।
অনেক দূরে হামলিনের বাঁশিওয়ালার বাঁশি বাজছে,
দুঃখ বোঝাই ঘর পিছনে রইলো পড়ে;
ঘর-ছাড়া আমি এগিয়ে চলেছি, বাঁশির সুরে।