কবিতার আসরের বেশিরভাগ কবিরাই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করি,কিন্তু কবিতার সমালোচনা করি কম। ইহার নানাবিধ কারণ বিদ্যমান রহিয়াছে বলিয়া আমার ষষ্ঠ অনুভবাঙ্গে অনুভূত হয়।
আরও উপলব্ধি করি যে, কবিতা যদি সমালোচকের দৃষ্টিতে গঠনমূলক সমালোচনা থেকে বঞ্চিত হয় তাহা হইলে শুধুমাত্র প্রশংসাসূচক স্তুতিবাক্যে কবিতার উন্নতিসাধন সম্ভব নয় এবং পক্ষান্তরে তাহা কবির কবিতার উৎকর্ষ সাধনের অন্তরায় হইবে বৈকি!
সেই সূত্রধরেই আমি আমার কবিতা "চিচিংফাঁক" এর নামকরণ সম্পর্কে দু'চারটি কথা আসরের কবিগণের সম্মুখে উপস্থাপনা করিতে উদ্যত হইলাম। যদিও, স্বরচিত কবিতার ব্যাখ্যা দিতে নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে এবং কিয়দংশে কুণ্ঠিত বোধকরি,তথাপি এই আসরে নিজেকে এক বিদ্যার্থী মনেকরি বিধায় নিজের জ্ঞানের পরিধি বর্ধিত করিবার সদিচ্ছায় এই লেখা লিখিবার নিমিত্ত মনস্থির করিলাম।
প্রতাশা রাখিব, কেহ এই প্রয়াসকে
কবিতার বিজ্ঞাপনের তাগিদ কিম্বা আত্মপক্ষ
সমর্থনের প্রয়াস বলিয়া অভিহিত করিবেন না। এবং করিলে এই শৌখিন কবিতানুরাগী বা অজ্ঞানী বড়ই মনোকষ্টে নিমজ্জিত হইবে।
আশা রাখিব আসরের কবিগণ এক সৌষ্ঠব সমালোচনা করিবেন, ফলস্বরূপ আমি এবং আমার মতো অনেকেই সেই গঠনমূলক আলোচনার নির্যাসে সঠিক জ্ঞান আহরণ করিতে সমর্থ হইব।
নমস্য কবিগণ যাহারা উৎসাহব্যঞ্জক আলোচনায় এবং গঠনমূলক সমালোচনার নিরিখে কবিতার পর্যালোচনা করিয়া ভুল ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেন তাঁহাদের নিকট বড়ই কৃতজ্ঞ। বাস্তবিক পক্ষে শব্দবন্দনায় তাঁহাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে আমি অসমর্থ।
উন্মুক্ত সাহিত্যকোষ হইতে জ্ঞাত হই যে, "Open Sesame" বা "চিচিংফাঁক" শব্দটি
এক সুন্দর জাদুমন্ত্র, যাহার উচ্চারণে অনাবৃত হইয়া যাইতো লুকায়িত মণি মাণিক্য। 'আলিবাবা'র শব্দধ্বণি আজও আমাদের কর্ণগুহে শিহরণ সঞ্চারিত করে।
স্বীকার করিয়া নিচ্ছি যে, "চিচিংফাঁক'' শব্দটির প্রকৃত অর্থ কবিতায় প্রকাশ পায়নি!! বলতে গেলে, প্রায় সম্পূর্ণ অন্য অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে। কিন্তু একটু লক্ষ্য করিলে, আমাদের অগোচর হইবে না যে, কবিতার ভিতর প্রকাশিত হইয়াছে এক না-পাওয়ার চোরাস্রোত; যাহার বেদনার্ত কান্না অনুভূত হইয়াছে কবিতার প্রতিটি ছত্রে, সেই না-পাওয়ার বেদনা বা শূন্যতা বোঝাইবার তাগিদে এই নামকরণের অবতারণা।
সাহিত্যের প্রয়োজনে দেখিতে পাই যে, নানা শব্দ নানারূপে ব্যবহৃত হইয়াছে, ইহার এক ধ্রুপদী উদাহরণ পরিলক্ষিত হয় যখন আমরা দেখি যে, "pregnant " শব্দটি জ্ঞানী কিম্বা wise হিসেবে ব্যবহার করেন এক অন্যতম ইংরেজ সাহিত্যিক ( নামটা উহ্য রাখিলাম)।
একথা মনে করিতে দ্বিধা নেই, সময়ের হাত ধরেই নূতন নূতন শব্দ সৃষ্টি হয় আর কালের স্রোতেই হারিয়ে যায় শব্দ অথবা হইয়া থাকে তাহার উৎকর্ষ বা অপকর্ষ।
কখনোবা ভিন্ন অর্থে আমাদের সম্মুখে উপনীত হয়, "সন্দেশ" শব্দটি যথার্থই এইরকম একটি শব্দ।
যাহাই হউক, লেখাটি আর দীর্ঘায়ত না করিয়া এইখানেই ইহার সমাপ্তি ঘটাই এবং আপনাদের সুচিন্তিত মতামতের প্রতীক্ষা করি।