টেবিলে শুয়ে থাকা পত্রিকা হাতে তুলে, আড়াল থেকে দু’চোখ মেলে...
ফাঁকি দিয়ে অঙ্কের ক্লাস, আর কাল্পিক কিছু ভ্রান্তিবিলাস
রুক্ষকেশ, ধ্রুপদী চাহনী অপেক্ষার প্রহর তোমার আগমনী
কোনো একদিন অকস্মাৎ তোমার আমার ছুঁয়ে গেল হাতে হাত;
তাই নিয়ে তারপর কত ! হৃদয়ের মাঝে ঘটেছে রক্তপাত।
চোখের কোণেতে বিলাসী জল, তাইদিয়ে মনের কালোদিঘী টল্টল্।
তোমার এক ঝলক যে কোনো ছলে, তুলোট মেঘ আকাশও পদতলে।
একাকী বিনিদ্র বিভাবরী যাপন, সেই একটুখানি স্পর্সস্মৃতির রোমন্থন;
যে দিন অকস্মাৎ তোমার আমার ছুঁয়েছিল হাতে হাত-
তারপর ধীরে ধীরে, আমার জীবনে তুমি, প্রথম প্রেমের সূত্রপাত।
একছাতায় দুজনায় বৃষ্টিতে, বেলা বয়ে যায় আমাদের শুভদৃষ্টিতে-
আইস্ক্রিম আর ক্যাফেটেরিয়ায়, পপকর্ণ সাথে সিনেমাহলের নিরালা কোনায়
অ্যাকাডেমি, আর্টগ্যালারি, বোটানিক্যাল, নন্দন কখনো বা ভিক্টোরিয়ায়,
তুমি ঘাসের বিছানায় মাথা আমার কোলে, আঁচলের আঁড়ালে সুর্য অস্তাচলে।
ক্লান্ত অমাবষ্যায় নিয়ন জ্যোৎস্নায়, লক্ষিপেঁচা এসে বসে আমলকী গাছে
হাতে হাত, চোখে চোখ, কত প্রতিঞ্জা-কত শপথ, একে অপরের কাছে।
সাপের মাথা থেকে ধূম্রক্ষেত্র বৈদুর্যমণি ছিনিয়ে এনে, বিষাক্ত মৌমাছির চাঁকে দিলে হাত
আমার তরে নীলপদ্ম আনতে, মৃত্যুকে করে কুপকাৎ, ক্লান্ত হলে কি হঠাৎ?
আমার জ্জ্বলন্ত আগুন তোমার তরল ঘি, মধ্যে সঙ্কোচের পর্দা, সে আর করবেই বা কী?
আমার নরম বুকে তোমার দাঁত-নঁখের ক্ষত, স্মৃতি আর বুকে জমাবোই বা কত?
এবেলা দিতে হয় ফাঁকির মাসুল, অঙ্কের সব হয়ে যায় ভূল-
তেলা-পিচ্ছিল বাঁশে বাঁদরের বেয়ে ওঠা, আর সাথে সাথে পিছ্লে নামা;
সেই তেলা স্থিতিস্থাপক বাঁশের, আস্ফালনের সকল হিসাব আছে জমা-
আমার দুটি পায়ের ভিতর। তারপর? তারপর! কতশত মহারণ!
বাঁশের মঞ্জরী, কাঁশফুল, ঘাসফুল, মধুঅলির গুঞ্জরণ, ক্রমে ক্রমে বাঁশবন...
বেণুবনে বিষের বাঁশী, আমার চারপাশে কিংবদন্তী অশরীরীদের অট্টহাঁসি।
ধ্বংসাত্মক ব্যার্থ প্রয়াস যতই কর গো হায়!
জীবনের প্রথম প্রেম! সে কি ভোলা যায়...