বেরঙিন জীবন, ভীড় করে আসা স্বপ্নরা;
লাল-নীল, হলুদ-সবুজ, গোলাপি-বেগুনি, রঙিন তারা
সাদা-কালোর ধূসর জগৎ,      আদিঅন্তহীন-
তীক্ষ্ণ ছুঁচের ফলার চিনচিনে ব্যাথা, গোটা হৃদপিণ্ড জুড়ে…
স্পন্দিত হতে ভুলে যায় তারা।
যৎসামান্য চাওয়া, চেয়ে কিছুই না পাওয়া-
অদৃষ্টের মস্তকে ক্রমাগত পদাঘাত
চোখে তবু স্বপ্নের রাঙিন নেশা।
চার দেওয়ালে হারিয়ে যাওয়া, হারিয়ে পাওয়া-
নিজেকে; স্বপ্নের হাত ধরে পথ চলা।
গভীর-ঘন, জমাট বাঁধা নিকষ কালো যামিনীতে
এক চিলতে মধ্য বেলার, চরম গরম আলো।
সে স্বপ্ন বুকটাকে ভরিয়ে তোলে নিঃশ্বাসে
স্বপ্ন ভুলিয়ে দেয় কংক্রিট ও তাসের ঘরের বিভেদ,
আলেয়ার পিছনে ছুটিয়ে নিয়ে চলে স্বপ্ন।

হঠাৎ, এক লহমায়, যখন ভাঙে স্বপ্নের খেলাঘর
শূন্য লাগে জগৎটাকে, ভিড়ের মাঝেও নিজেকে পাই একা।
কাতারে কাতারে লোক চারিদিকে-
সব চেনা মুখগুলো আচেনা লাগে, কেউ নেই আপনজন
প্রতিটা দিন, ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে বয়ে চলে যায়;
মনের সাথে মনোমালিন্য, বজায় রাখে রাতগুলো।
শূন্যতা, শূন্যতা- জগৎ জোড়া শূন্যতার মান্যতা
মনের পৃথিবী জোড়া শুধু একাকীত্বতা
কেউ ফিরে তাকাবে না- ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে চলে মন,
স্বপ্ন ভাঙা মন, ‍অশ্রু শুধু গুমরে মরে মনের সাথী হয়ে।
মন এখন, না হাসে না কাঁদে, না বাঁচে না মরে-
শুধুই ভাগ্যকে দোষারোপ করে।
ধুলোমাখা অলিগলি হতে, পিচগলা রাজপথে। আরও অন্য পথে...
ভবঘুরে মন, আমার কথা শোন, বৃথাই এ জীবন-
এই কংক্রিট রাজনগরীতে, প্রতিটি ঘরে ঘরে,
পাথরের মানুষ বসত করে।
পাথর-মানবের বুকে, বসত ইস্পাতের মন-
কি বা আর পাবি, অকারণ মিছামিছি করে খোঁজাখুজি।
ও মন, ও উদাস মন, ও পাগল মন, ও ক্ষ্যাপা মন
ও উদাস-পাগল মন, ও ক্ষ্যাপা-পাগল মন, তুই আমার কথা শোন,
এ পাথর রাজনগরী ছেড়ে, চল চলে যাই, অন্য কোথাও দূরে-
মিছে এ সুখ শান্তি পাথরের রাজনগরী, নহে নহে আমাদের।
দূর হতে বসে দেখি, অপেক্ষা করি, আসবে সে বসন্ত কবে?
কংক্রিট রাজনগরীর সকল পাথর মানব, তাদের ইস্পাত মন,
গলে প্যাঁচপ্যেঁচে কাঁদা-মাটি হয়ে যাবে    যবে।।
--------------------------x---------------------------