কোন এক নারীর কাছে, একটু আড়াল চাইব ভেবেছিলাম-
আঁচলের নয় পর্দার। পুরু ও শক্ত পর্দার।
বাইরের জগতের আলো, আর সকল কালো
আছে যত, সাবাই একসাথে ঘিরে ধরে-
আমার হৃদয় ও মস্তিস্ককে সমবেত ভাবে আঘাত করে।
তাই আড়াল চাইব ভেবেছিলাম-
আঁচলের নয় পর্দার।
কবে যেন একদিন, কোন্ এক নারী আমায় বলেছিল
কি হবে নিজেকে পর্দা দিয়ে ঘিরে-
পর্দার আড়ালে নিজেকে রেখে,
আলো আর কালো এসব কি ঢাকা যাবে?
যাবে হয়তো! যদি বা যায়; আজ থেকে
হাজারখানা গ্রীষ্ম বর্ষা শীত বসন্তের পরপারে
আবার যদি আলো দেখতে ইচ্ছা করে-
দাঁত মেজেছি, নখ রেখেছি, গোটা জীবন ধরে,
পর্দা ছিঁড়ে আলো দেখার তরে।
আলোই যদি, দেখবে তবে কেন আড়াল চাও?
পর্দা ছিঁড়ে দেখার সে সুখ- বলো কি দাম নেবে, নাও।
আলোআঁধারির খেলার ছলে, মনের ছেড়া খাতা
কুঁড়িয়ে এনে বাঁধিয়ে দেব, উড়ে যাওয়া সব পাতা।
কথায় কথায় আদিখ্যেতায়, বেলা গেল মেলা
আবার আমার শুরু হল, আড়াল খোঁজার পালা।
আড়াল খুঁজি আড়াল খুঁজি- আড়াল মেলে কই
আড়াল যারা পেল, তারা বাঁধাল হইচই।
যতবেশী আড়াল খুঁজি, ততই বেশী করে
আলোরা সব ছুঁচ ফুটিয়ে যায়, আমার চোখের পাতা টেনে ধোরে।
চোখের রক্ত ঝরছে আমার, অন্ধ হচ্ছে চোখ,
কালোরা সব ঘিরে ধরে বলছে আমায়-
এবার তবে ন্যায়ের বিচার হোক।
সেই কবে শুরু, একটু আড়াল, পর্দার আড়াল খোঁজা,
সবাইকে ডেকে ডেকে জিঞ্জাসা করব ভাবি-
সংকোচে আর পারিনা। অবশেষ দর্জির দোকানে;
এ দোকান সে দোকান, সবাই দিল ঘুরিয়ে,
কেউ বলে একটু আগে, কেউ বলে অনেক আগেই গেছে ফুরিয়ে।
রাস্তায় দেখি যাদের, চোখে পর্দা বেঁধে ঘোরে,
রোজ দেখি তাদের, হিংসা হয় যে খুব-
একবার এক সোমত্থ ললনাকে বলেছিলাম
রোজ যে ছিঁড়ে ছিঁড়ে, আলো দেখা খেলিস
এত সব পর্দা তোরা পাস কোথা!
ইন্দ্রজাল করি, ছেড়া পর্দাই ছিঁড়ে দেখাই,
বোকার হদ্দ ভাবে, ভাগ্যবান সে একাই।
তবু স্বীকার করি, ভাগ্যবান তো কিছু আছেই।
গ্রীশ্মবেলায় চড়া রোদের ভরা দুপুরে
আড়াল চাইলে আড়াল পাবে এমন ভাগ্য...
যারা পায় তারা, অনেক অধিক করে পায়
প্রয়োজনের অনেক অধিক পায়, হায় আল্লা হায়!
বিধাতাও তেমন! তেলা মাথায় কেমন তেল দিয়ে যায়।
আর দুর্ভাগা যে, তপ্ত বেলায়, সে কি আড়াল চায় না?
ওসব ফালতু কথা, আসলে তো, ভাগের মা গঙ্গা পায় না।
ক্লান্ত এখন শ্রান্ত আমি, আজ চরম সিদ্ধান্ত নেব-
পর্দা খুঁজব আবার আমি, নাকি রোদ-চশ্মা, অথবা,
নিজের হাতেই নিজের দুচোখ গেলে দেবো।।
--------------x---------------