সৃষ্টির কথা-
পৃথিবীর প্রথম মানুষ আদমের কাছে হবার মত..
          সে দিয়েছিল প্রথমে মুখের রূপ,
তার অস্ত্রে আমার চতুষ্কোণ শ্বেত পাথর ভেঙে ভেঙে;
যেভাবে কোনো কালে
                কোনো জননীর যোনি থেকে--
অনেক যন্ত্রণার পর অসুস্থ সন্তানের কিছুটা মুক্তি।
                  যে মায়ের শরীরে,
      দাঁতের উপর দাঁতের শক্ত কঠিন কামড়ে
      অনেক শক্তি এখনোও প্রয়োজন
                 তার যোনিতে উজার করে দিয়ে
                 তার সন্তানের পূর্ণাঙ্গ জন্ম দিতে।

বর্ণনা দেয় জনতা--
       আমাকে জাদুঘরে সাজিয়ে নিলামে ডাকা
                   বা নগ্ন ম্যানিকিনের মত ক'রে;
            আমার শ্বেতপাথরের শাদা শরীর--
হাতির দাঁতের উপর কারুকার্য করা ছোটো খেলনা।
        সুন্দর চোখে জীবন্ত মানবীয় দৃষ্টি--
সমস্ত জেনেও না জানার নির্বাক অভিনয় করছে
বা মৃত মানুষের কারণে হৃদয় ভেঙে যাওয়া-
                             নিষ্পলক নায়িকা।
পাথরের খাঁজে রেখা দিয়ে আঁকা
      দীর্ঘচুলের বরফ খ'সে-পড়া ঝর্ণার বর্ণনা--মুখের সৌন্দর্যে বালিকা রুপ আনার সম্পূর্ণ চেষ্টা।
     হাতদুটো এখনোও রুপ পায়নি,
          পাথরের চতুষ্কোনে বন্দী
      কোনো অবাধ্য শান্ত চতুর কয়েদীর মতো
                       শিকলের গভীর ভিতরে।
অতি ধৈর্য ধরে স্তনের পাথর ভাঙে
                 দুটি সমান পেয়ালার রুপ দিতে,
      এই সমাজের ক্ষুধার্ত দুটি যমজ শিশুমুখ
সমানভাবে যেন পানীয় ভাগ করে নিতে পারে।
           তারও নীচে পাথর সরিয়ে তৈরি হয়
জঠরের মাঝে ভ্রুনের কাছাকাছি-
                            বিশাল ময়দানের গহ্বর;
একটি শিশু থাকার মতো ক্ষুদ্র চিলেকোঠা;
        বোঝা যায় রুপে তাকে
                স্তন্যপায়ী বিবরণ এনে দিতে।
দুটি সমান আকারে পায়ের জন্ম দেওয়ার আগে
পাথর খুঁড়ে খুঁড়ে রচনা করে গভীর বিস্তির্ণ যোনিপথ
                       পরিপূর্ণ বালিকার রুপ দিতে...
খুঁড়ে আনা অতিরিক্ত পাথর জমা করেছে
                           সে নীজের যোনিতে,
বিদ্রোহে জয় ক'রে বিশাল শহীদ মিনারের
                    কীর্তিস্তম্ভে ঐশ্বর্য বাড়াতে।
কখনোও আমার যোনিপথে
মাসের সর্বোচ্চ রক্তদান হয়ে যায়
                     আবর্জনার যন্ত্রণার মতো,
                     এই রক্তাল্পতার দেশে;
কখনোও আসে তার শহীদ মিনারের বিষাক্ত যন্ত্রনা।
                  বড়োই চালাক মূর্তিকার সে--
সে সৃষ্টি করে একবার আমাকে,
                            তার সৃষ্টির পরে,
আমার শরীর থেকে সহজে হাজার মূর্তির সন্ধানে....


                   (নারীবিষয়ক)