১) চাঁদের চামড়া একটু হলুদ বর্ণ,
আমারটা সময়ের সাথে কালচে হয়ে যায়।
তারপর খসে পড়ে এক একটা পরত,
অলতো হাওয়ার ঝটকায়।
২) যুদ্ধ শুরুর আগের সেই বর্ষাতিটা পড়ে আছে দরজার পিছনে
পকেটে একটা অদরকারি চিঠি
বারান্দার টবে নির্বাক কিছু কুড়ি,
শুধু একটা রাতই তার জীবন।
সময়ের ক্ষত ধীরে ধীরে বেড়ে যায়
হৃদয়ের কোণে
তারপর,
কালো মেঘ ছেয়ে ফেলে চারিদিক।
৩) কেউ কেউ বলে
চুলের নাকি দুটোই রং হয়;
কালো, না হয় সাদা।
আর কবরের পাশের ঘাসগুলো? প্রথমে সবুজ, তারপর?
৪) আমাদের ঘুড়িগুলো
ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে আকাশের বুক থেকে।
কোনটাই আর ফিরে আসেনি।
শুধু সুতোগুলো থেকে গেছে আমাদের হাতে,
নিষ্প্রাণ এক দলা সুতো।
৫) ব্যথা,
বারবার বুঝিয়ে দেয় আমাদের বার্ধক্য।
ঘুমন্ত মাটির নীচে পড়ে থাকা শিকড়
আর বাতাসের ছোঁয়ার
এক এক করে উড়ে যায় শুকনো পাতা
৬) মাঝেমাঝে আমি রেগে যাই আয়নার উপর।
যদি
শহরের সমস্ত আলো নিভে যায়
আর কোনদিন যদি না দেখতে হয় নিজেকে।
আমি দুহাতে ভেঙে দিই আমার মুখ
দু ফোঁটা রক্ত পড়ে পায়ের কাছে।
৭) আমরা সে বছর গোরস্থানের পাশে দাঁড়িয়ে যুদ্ধের গান গেয়েছিলাম।
মাথা উঁচু করে ঢুকে গিয়েছিলাম ইতিহাসের পাতায়।
আমরা তখন তপ্ত ইস্পাতের উপর পড়া
এক ফোঁটা জলের মত।
আমাদের উর্দিতে লেখা নাম
রাইফেলের গুলির থেকেও তীব্র।
কিন্তু আজকে ওই পাশের ব্যারাক থেকে ভেসে আসা কান্নার শব্দ শুনে
উঠে বসলাম, গায় যে আজ উর্দি নেই।
কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকলাম দুহাতে মুখ ঢেকে।
আর শুনলাম সময়ের টিক টিক শব্দ।
৮) মনে পড়ে সেই সব দিনের কথা,
ঘুম ভাঙত গ্রেনেডের আওয়াজে...
সন্ধ্যা নামত
ঘোড়ার খুরের শব্দে,
আর এক বৃদ্ধ সৈনিক মাথা তুলে দাঁড়াত
একশোটা মৃতদেহের মাঝখানে।