* অশ্রুত কথারম্ভ *
যেদিন তুমি এসেছিলে
শ্রাবণ ঘনীকৃত বর্ষা রজনীতে ।
কোন এক অজানা অতৃপ্তি নিয়ে ,
অনুভূতি ভেজা , ব্যাকুলময় হৃদয়ে।
দরজা নাড়ালে বাহির থেকে,
ভয়ে আমি ঘরের ঠাসা কোণে
জানলা দরজা বন্ধ করে।
ধাক্কা দিলে জোরে জোরে,
ডাকলে তুমি বারে বারে।
সাড়া পেলেনা কোনখানে,
দাঁড়িয়ে তবু অধীর নয়নে ।
আমি তখন ,অবিশ্বাসের ঘোমটা
টেনে, রেখেছি নিজের ভেতরটা।
দরজা খোলার সাহস কোথায় পাই ?
পেলেনা মাটি মনের আঙিনায়।
বহুক্ষণ দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষায় ,
যাবার আগে উচ্চস্বরে বললে আমায়,
‘থেকো না এমন আটক হয়ে,
ফিরব আবার তোমার দ্বারে।
অনেক কথা বলার আশা ______
বিদীর্ণ করে ,নীরব অবহেলার ভাষা । ’
তখনো ভাবি মনে মনে,
কথা গুলো না শোনায় থাক,
জগতের সব কথা শুনতে হবে,
এটা ,নয় তো আবশ্যক ।
আজ যখন বহু বছর গেল পেরিয়ে ,
হাঁপিয়ে উঠেছি একাকিত্বের বোঝা টেনে,
কতো শ্রাবণ পেরিয়ে, শরৎ কাশে হাসে
শরৎ পেরিয়ে যায় বসন্তের পলাশে।
মনে পড়ে , তোমার মুখখানি ,
তাড়া করে, তোমার না বলা শব্দের ডালি,
আজ আমি শুনতে চাই ,
তোমার না বলা সব কন্ঠধ্বনির ভান্ডার,
জানতে চাই ,কি ছিল সেদিন বলার।
তোমার মনের ভূমিতে তিলে তিলে জমা
শক্ত ,অনড় বরফের পাহাড়টা।
একটু একটু করে গলে নদী হয়ে,
বেড়িয়ে আসুক তোমার অন্তস্হল থেকে। সেই জলধারার কুলু কুলু ধ্বনি
আমার কর্ণগহ্বরে প্রবেশ করুক ,
প্রবল বেগে হৃদয়ের দরজায় ধাক্কা দিক,
আসুক জোয়ার , উথালপাথাল ঢেউ আসুক
খুলে যাক দরজা , তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হোক,
সেই তড়িৎ তরঙ্গের ন্যায় যাক ছড়িয়ে ,
হৃত্কোষ থেকে সমুগ্র শরীরের প্রতিটি কোষে,
রক্তবাহে,শিরায় শিরায়, ধমনীতে ধমনীতে,
হয়তো সেই তড়িৎ অসংখ্য আলো জ্বালবে,
হাজার হাজার বাতির আভায়,
হয়তো মুছে যাবে জীবনের সকল আধাঁর ।
তাই আমি শুনতে চাই, সব অশ্রুত অক্ষরমালা ,
বুঝতে চাই, কিসের টান ভিজিয়েছিল তোমায় সেদিন,
জানতে চাই , কি ছিল তোমার বলার সেদিন ।