একদিন যে ঘর ছিলো ভরা-
আলো আর হাসির উচ্ছ্বাসে,
আজ সে ঘর নিঃসঙ্গ খাঁচা,
নীরব কান্না দেয় প্রশ্বাসে।
একদিন যে ডাকতো আমায়-
ভালোবাসার কোমল সুরে,
আজ সে দূরে, বহুদূরে,
হারিয়ে গেছে অজানার ভীড়ে।
একদিন যে হাতটি ধরেছিলো-
সংকটে, সুখে, দুঃখের মাঝে,
আজ সে হাত শূন্য বাতাসে,
মুছে গেছে স্মৃতির সুরের সাজে।
নদী যেমন শুষ্ক মরুতে-
পথ হারিয়ে মরে যায় ধীরে,
আমার হৃদয় নিঃশেষ হলো,
ভালোবাসার অনলে পুড়ে।
দিনের শেষে রাতের আঁধারে-
আমি একা দাঁড়িয়ে থাকি,
শুধু শুনি বাতাসের কান্না,
একা একা হারিয়ে যাই নিঃসঙ্গতায়।
দরজার সামনে কাঁপে প্রদীপ-
বাতাস তাকে নিভিয়ে দিতে চায়,
ঠিক তেমনি আমার জীবনে,
আলো জ্বেলে কে বা আসে হায়?
ছোট্ট আঙিনায় ঝরে ফুলগুলি-
এক সময় যা সুবাস ছড়াতো,
আজ তারা মলিন, নীরব,
ধুলোর নিচে পড়ে রইলো তবু।
জানালার ফাঁক দিয়ে চাঁদ হাসে-
কিন্তু সে হাসিতে নেই উষ্ণতা,
রাতের আঁধারে ডুবে আমি,
শুধু খুঁজি আগের স্মৃতিটা।
এভাবে যদি দিন কাটে যায়-
এভাবে যদি ফুরিয়ে যায় আশা,
তবে কিসের জন্য রইলাম আমি,
কিসের তরে এই ভালোবাসা?
বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দেয় পথ-
কিন্তু আমার হৃদয় শুকনো,
জল গড়িয়ে পড়ে চোখের কোণে,
তবু কান্না থাকে অগোচর।
দেয়ালের ওপারে বাজে সানাই-
কারো ঘরে বেজেছে বিয়ের সুর,
কিন্তু আমার নিভে গেছে প্রদীপ,
অন্ধকারে হারিয়েছি নূর।
একদিন হয়তো হারিয়ে যাবো-
এই শহরের কোলাহল ছেড়ে,
শুধু স্মৃতির পাতায় পড়ে থাকবে,
এক নিঃসঙ্গ জীবনের কাব্য গড়ে।
চেনা পথ আজ অচেনা লাগে-
যেখানে হেঁটেছি শত শতবার,
আজ সে পথ শুন্য পড়ে আছে,
নেই কোনো পায়ের কোলাহল আর।
বন্ধু যে কথা দিয়েছিলো-
একদিন যে রয়েছিল কাছে,
আজ সে নেই পাশে,
হারিয়ে গেছে সে অজানার মাঝে।
ছোট্ট বারান্দায় বসে থাকি-
অতীতকে দেখি স্মৃতির আয়নায়,
একটা একটা ছবি উঁকি দেয়,
যেন হারিয়ে যাওয়া কোন ছায়া।
রাত গভীর হয়, বাতাস বয়ে যায়-
তবুও ঘুম আসে না চোখে,
মনে হয় কেউ ডাকছে আমায়,
কিন্তু সে ডাক মিলিয়ে যায় শূন্যে।
একদিন কি এই নিঃসঙ্গতা-
শেষ হবে কারো ভালোবাসায়?
নাকি এভাবেই হারিয়ে যাবো,
অজানা অন্ধকারের গহীন ছায়ায়।
পথের ধুলোয় লিখেছি নাম-
তবু হাওয়া এসে মুছে দিলো,
জীবনের পাতায় শত বছর চেয়েছি,
সে যেন আমায় ভুলে চলে গেলো।
একদিন যে স্বপ্নগুলো বুনেছি-
নদীর জলে ভাসিয়ে দিলো কে?
আজ আমি বসে আছি একা,
কোনো উত্তর আর আসে না যে?
আকাশের তারা জ্বলে নিভে যায়-
সময়ের স্রোতে মুছে যায় সব,
তবু এক বুক ব্যথা নিয়ে,
আমি রইলাম নিঃসঙ্গতায়।
পাহাড়ের চূড়ায় বসে ভাবি-
নিচে নেমে যাবো কি না,
সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে,
নতুন পথ খুঁজবো কি না?
নদীর স্রোতে ভাসে শুকনো পাতা-
আমার হৃদয়ও তেমনই যেন,
ভালোবেসে সে বলেছিল আমায়,
"একা একা কিভাবে থাকবে, হেন!"
মাঠের শিশির ভেজা ঘাসে-
খালি পায়ে হাঁটি আমি,
পায়ের ছাপ রেখে যাই,
কিন্তু সে আর ডাকে না নাম ধরে।
এ শহরের ব্যস্ত সড়কে-
মানুষের কোলাহল বাজে,
কিন্তু আমার নিঃসঙ্গ হৃদয়,
শুধু একাকীত্বের বাঁশি বাজাই।
একদিন হয়তো আমিও হারিয়ে যাবো-
নিঃসঙ্গতায়, কিংবা তোমার সনে,
শুধু থেকে যাবে তোমার আমার গল্পগুলো,
স্মৃতির ধুলো জমা হবে হয়ত কোন এক বিকেলে।