প্রিয় বাবা,
এখনও চলছে অবিরাম যুদ্ধ
বাংলার মানুষ হয়েছে ক্ষুব্ধ
হঠাৎ এক মেশিনগানের শব্দ!
ধ্বংসস্তুপে আমাদের খাস,
লন্ডভন্ড,ছারখার চারপাশ।
ভয় পেও না বাবা,
তুমি তো জান,
শত্রুরা জীবন নিয়ে খেলে
মনোবল দৃঢ় রাখো,
আমি তোমার দামাল ছেলে।
শুন বাবা,
এসেছে ফিরে বাংলার ছেলে
বুলেটে বিদ্ধ দেহ,
রক্তে আন্দোলিত,
হলো তার প্রাণের নাশ
তারই ত্যাগে হলাম গর্বিত।
হঠাৎ এক আক্রমণ!
মুখে দিতে পারিনি-
একমুঠো ভাত,
ছিন্নভিন্ন চারপাশ,
তবুও করছি বাজিমাত।
উত্তপ্ত দুপুরে,
লাউ মাচার সাথে
মেশিনগান রেখেছি কাঁধে,
বাংলার দামাল ছেলের
রক্তাক্ত জামা নিয়ে,
গর্জে উঠি একসাথে।
প্রিয় বাবা,শুন যদি-
হঠাৎ একটি বুলেট,
লেগেছে আমার বুকে,
বলছি তুমি কাঁদবে না!
আমায় হারানো শোকে।
মনে রাখো বাবা,
বুকের রক্ত দিয়ে লিখব,
তোমার দামাল ছেলে,
স্বাধীনতার ভাঁজে-ভাঁজে,
বেঁচে থাকবে লাল-সবুজের মাঝে।
দোয়া করো বাবা,
আমি না ফিরলেও যেন
নতুন জীবন মেলে,
বিজয়ী হয়ে ফিরে যেন
বাংলার দামাল ছেলে।
ইতি-
তোমার দামাল ছেলে
জহির রায়হান
১১ নং সেক্টর,
অপারেশন-কামালপুর।
বকশিগঞ্জ,জামালপুর।
(আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি দাদার কাছে চিঠি লিখেছিলেন।মুক্তিযুদ্ধের তার চিঠির ঘটনাটি আমি শুনেছি।তাই আমি ঘটনাটিকে কবিতা আকারে লিপিবদ্ধ করলাম।তারিখটি জানতে পারি নি।)