দরাজ রৌদ্র এসো তবে ঘরে / অনিরুদ্ধ আলম
কাল সারারাত জানালাটা খোলা ছিল
আকাশে-আকাশে বর্ষার দোলা ছিল
রাতের বাকলে জলকণা জ্বলছিল
হাওয়ারা কী যেন কানে-কানে বলছিল।
আকাশে জ্বলে নি তারাদের ঝাড়বাতি
বাদাড়ে ছিল না জোনাকির মাতামাতি
বাদল হঠাৎ মাদলের সুরে
না-বলা বেদনা গানে-গানে বলছিল।
মেঘের ওপরে মেঘগুলো রাখা ছিল
ধাঙর মেঘেরা কুঁজো আঁকাবাঁকা ছিল
এ আমি তো এক ক্লান্ত শালিক
মনে জমে-থাকা কালো মেঘ গলছিল।
জানালার পর্দায় উঠেছিল ঝড়
মনেও ভীষণ আহা ছুটেছিল ঝড়
মননদী মন্থনে নিরবধি
আমোদী আবেশে আবেগ যে টলছিল।
বাইরে বাদল। মনেও অঝোরধারা
প্রজাপতি হয়ে দিয়েছিল খুব নাড়া
কত উচ্ছ্বাস আকাশে বাতাসে
মেঘে-মেঘে বিদ্যুৎরেখা ফলছিল।
চেয়ার টেবিল খাট একাকার ভিজে
মেঝে জামা জুতো জলে জবজবে কী যে
মনটাতে ভালোলাগার দারুণ
উত্তাল রেলগাড়ি ছুটে চলছিল।
গাছগুলো যেন শ্রাবণেই মেতেছিল
শ্রাবণের গানে মনপ্রাণ পেতে ছিল
বৃষ্টিতে নেয়ে চারদিক খুব
গূঢ় আনন্দে মিষ্টি শীতল ছিল।
অনেক কিছুই এলোমেলো হবে ঝড়ে
সকাল তো হবে। রৌদ্র আসবে ঘরে
গুছিয়ে তখন নেব সব ঠিক –
এ ভাবনাতেই হৃদয় গীতল ছিল।
দরজাটা খোলা আছে
দরাজ রৌদ্র তুমি এসো তবে
স্যাঁতসেঁতে ঘরে এই-না আমার কাছে।