অকেজোর স্বপ্ন / অনিরুদ্ধ আলম

শাদা বকফুল ভাবে বক হয়ে
একদিন উড়ে যাবে
হলুদিয়া চাঁদা ভাবে ঘুড়ি হয়ে  
উড়ে-উড়ে দূরে যাবে।

উড়ু-উড়ু শুধু আমার এ মন
অনুক্ষণ ভাবে জলদি কখন
হাওয়া হয়ে ছুটে গিয়েই তোমার
ধল আঁচলে লুটাবে।

কচি ঘন ঘাস আশা একরাশ
বুকে নিয়ে বেড়ে ওঠে
রাজহাঁস হয়ে ছুটবে নিমেষে
কত মাঠ ঘাট গোঠে।

আমার এ মন কী-যে উচাটন
সারাক্ষণ ভাবে অচিরে কখন
প্রজাপতি হয়ে তোমার সিঁথিতে
শুধু লুটোপুটি খাবে।

পলক না-ফেলা রোদের ঝলক
ভাবে কিশোরীর নাকে
নিকানো নোলক হয়ে চলকাবে
শোলক শোনাবে তাকে।

আমি ভাবি ঝোরা হয়ে ক্ষণেক্ষণে
মাতব তোমাকে নিয়ে আলাপনে
গীতল কথার শীতল পরশে
আমাকেই খুঁজে পাবে।

আকাশের বুকে তিল এঁকে দিতে
ভাবে ঝিলমিলে বিল
হারিয়ে সে যাবে দূরপ্রান্তরে
হয়ে কোনো গাঙ চিল।

আমার এ মন পাখির মতন
বড় উন্মন যখনতখন  
শুধু ভাবে ঘেসো ধানটুনি হয়ে
তোমার বুকে লুকাবে।

কাঁচারঙে-মাজা ঝলমলে এক
ঝাঁক মাচা-ভরা ঝিঙে
ভাবে – নেচেগেয়ে মাতাবে পাড়াগাঁ
হয়ে টিঙটিঙে ফিঙে।

আমি নগণ্য কুড়ে ঝরাপাতা
ভাবি সারাবেলা এলেবেলে যাতা –
সাধ হয় - হারিয়ে যাই তোমার
ঝলমলে কিংখাবে।

তুলোতুলো মেঘগুলো দিগন্তে
ভেসে এসে ভাবে খুব
খোকার রঙিন জামার পকেটে
আচমকা দেবে ডুব।

ফুরফুরে রাঙা ফড়িঙের মতো
আমার এ মন ভাবে অবিরত
কীভাবে তোমার উতল উছল
সান্নিধ্যটা পাবে?

চরে নয়া ঘর ভাবে ঘুমঘোরে –
কখনো হরিণ হ’লে
তাধিন নেচে সে ঘুরবে ভীষণ
শুধু বনজঙ্গলে।  

কাজ নাই আজ তাই সারাদিন
আমি তো স্বাধীন! আমি তো স্বাধীন!
ওগো কাশফুল আমার সঙ্গে
দূরপাথারে কি যাবে?