আমার আছে একপশলা বেলা / অনিরুদ্ধ আলম
দিনের একটা ঝলমলে ধলপহর আছে
ধলপহরে ডহর আলোর বহর আছে।
ফুলতোলা মেঘ। তার রাঙা এক দুপুর আছে
মাঠের হাটের শুকনো পাতার নূপুর আছে।
আঙিনাতে ধানের আঁটির মড়াই আছে
ধান গুনতে ছন্নছাড়া চড়াই আছে।
ঘাস-অরণ্যে কাশফুল রাজকন্যা আছে
তার জন্যে রোদচুমকির বন্যা আছে।
একলা একা খেরো ঘরটা দাঁড়িয়ে আছে
অপেক্ষাতে দিনভর আগবাড়িয়ে আছে –
কেউ আসবে – এই ভাবনায় মগ্ন আছে
এমন রঙিন কত-না তার লগ্ন আছে।
মেঠোপথের একমুঠো দিগন্ত আছে
দিগন্তে প্রান্তররা প্রাণবন্ত আছে।
প্রান্তরে পালতোলা হাওয়ার মাদল আছে
আলটপকা অঝোর জলের বাদল আছে।
শেষবিকেলের নিকেল-করা বৃষ্টি আছে
বৃষ্টির সুর টাপুরটুপুর মিষ্টি আছে।
ধানটুনি আনমনে গায়। সে ব্যস্ত আছে –
তার ওপরে এ দায়িত্ব ন্যস্ত আছে।
ঝুমকো টিলার জংলা সবুজ চাতাল আছে
মোহন ঘ্রাণে মহুয়াবন মাতাল আছে
বনের মোড়ে বোতাম ফুলের বাদাড় আছে
বলতে পারো – বাদাড় তো নয় আদাড় আছে।
অই যে লোকটা যায়। তার এক কিচ্ছে আছে
গল্পবলিয়ে হবে সে – খুব ইচ্ছে আছে।
কণ্ঠে যে তার উতল গীতল পদ্য আছে
ঝুলিতে কী? চমক অনবদ্য আছে!
ক্লান্ত দিনের শান্ত স্নিগ্ধ সন্ধ্যা আছে
সন্ধ্যামালতি রজনিগ্নধা আছে।
গোধূলিটিপ লাল সুজ্যির অস্ত আছে
আস্ত চাঁদটা উঁকি দেয়। তা মস্ত আছে।
জোছনাধোয়া রাতের হলুদ আলতা আছে
পেখমমেলা কদম শিমুল চালতা আছে।
জোনাকচাদর জড়ানো টুং পাহাড় আছে
টুং পাহাড়ের চোখ-জুড়ানো বাহার আছে।
আমার আছে কী?
এসব ছবিই হৃদয়ফ্রেমে
গভীর প্রেমে
আগলে রেখেছি।