চিত্রার চৌকাঠ পেরিয়ে / অনিরুদ্ধ আলম
বুনো বকুলের গন্ধে
আদুরে হলদে পাখি
আনন্দে গায় অজানা-অচেনা ছন্দে।
মেলে ধ’রে তার মায়াবি-মায়াবি আঁখি
ক’রে যায় ডাকাডাকি।
রাত হয়ে এলে ঢ্যাঙা দিঘিপাড়ে ছোপানো জোছনা নাচেন
হলদে পাখিকে দেখেই চেঁচান, “আপনি কেমন আছেন?”
বিচিত্র ঢঙে চিত্রল কথাগুলো ভেসে গেল চিত্রার কালো জলে
চৈত্র এসেছে মানেই নিতল লাবণ্য আজ উছলে উঠবে অটল হিজলতলে।
টুপ ক’রে নামে চকিত হরিণ-দুপুর
ঝুমুরঝুমুর নীরবতা বাজে। ঝিকোয় পাতার নূপুর।
হাতে হাত রেখো। অথই বেলায় লাবণ্য কাছে এলে
ঘুরে এসো দিঘি। দিঘি নির্ঘুম বেনো হাওয়া মেখে। স্বপ্নের পাখা মেলে
এই তো এসেছে তিতির-ধনেশ। যদি আর এখানে না-ই বা আসে কেউ
আকুলতা এসো। আকুলতা থেকো বকুলের ঘ্রাণে জাগিয়ে প্রাণের ঢেউ।
এঁকো উচ্ছ্বাস। ঘাসের কাঁপন। বৃষ্টিযাপন। নদীটার অধীরতা
অধীরতা বেয়ে বেড়ে-ওঠা থোকা ডোরাকাটা ছায়ালতা।
হোক-না বয়স কুড়ি
সারা দিন শুধু কানামাছি খেলা। মেঘদের গূঢ় কথা
জেনে গেছে চিল। নীল নীল চিল ঠোঁটে পুরে নেয় রৌদ্রের বাহাদুরি।
যে এসেই ফিরে গিয়েছিল ভুলে তুমি ডেকে এনো তাকে
সকলেই ভোলে। ভুলো নাকো ভুলে। খুঁজে নিও ঠিক কাশ-মশালের ঝাঁকে।
আকুলতা এসো। ভালবেসো খুব নিশ্চুপ ঝিনুকের এক বুক
উন্মুখ স্বাদু সুখ।
কাগজ-কলম সঙ্গে এনেছ? কথকতাগুলো নিকিয়ে তো নেবে হৃদয়-হ্রদের জলে
জলে জ্বলে ওঠে মেছো রঙে আঁকা টায়রা
সন্ধ্যা ঘনায়। ঘরে ফিরে আসে অপুদের সব পায়রা
দিঘি হয়ে যায় দখিনের দাওয়া। দাওয়া হয় দিঘি জোছনা খেলার ছলে!