২৪.০২.২০২০.
প্রত্যেকটা ছবি দেখি, আর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
তাকে অনেক খুঁজেছিল তার বাবা।
মৃতদেহের স্তুপে
চাদর সরিয়ে সরিয়ে,
পরিত্যক্ত রাস্তার মোড়ে,
নিষিদ্ধপল্লীর আনাচে কানাচে-
অবশেষে হাসপাতালে পেয়েছিল তাকে।
মৃতদেহটি নির্দ্বিধায় পাজামার দড়ি খুলে দিয়েছিল।
আসুন এই ছবি দেখি, আর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
প্রসূতির পেটে ত্রিশূল ঢুকে ছিল একটা।
যেভাবে বিলের পর বিল, আইনের পর আইন
আমাদের চেতনায় ঘা করে ঢুকে যায়।
প্রসূতি নিঃসাড়ে পড়ে ছিল অনেকটা বেলা,
যেভাবে কাশ্মীর পড়ে আছে দুশো দিন।
একটা দ্বীপে মাটি কামড়ে একবছর
জল নেই
খাবার নেই
দণ্ডকারণ্যে ফেরবার মত
সহজ বুদ্ধিও ভগবান দেয়নি
কাগজে একটা খবর নেই
'৭৯... ২০০২... ছবিগুলো ভোলা চলবেনা
আসুন এই ছবি দেখি, আর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
একটা ছেলে,
একমাথা কালো কালো চুল
কালো চোখে ভুল করে অনেকটা আকাশ
আর অনেকটা পৃথিবী নিয়ে
সে এসেছিল।
কার্ল সাগান, আমাদের কার্ল সাগান
এই মহান ভারতবর্ষকে সে দোষী করে চলে গেছে
অনেকদিন হল
আসুন সেই চিঠি পড়ি, আর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
আমি আজ ঘৃণা করতে শিখেছি।
আমরা আজ ঘৃণা করতে শিখেছি।
লালবাতি জ্বলা গাড়ি, সাজানো মাইক,
ঈশ্বরবৎ কিছু মানুষ, কিংবা খোদ ঈশ্বরকে
আমি আজ ঘৃণা করতে শিখেছি।
যে মানুষটি কিছুক্ষণ আগে খুন হয়েছে দিল্লিতে,
সে আমার দাদা।
যে শিশুটি গুলির আওয়াজে কেঁদেছে সেদিন,
সে আমার বোন।
যে শিশুটির চোখ ঝাঁঝরা হয়েছে সেদিন,
সে আজও আমার কাছে নালিশ জানাতে আসে।
যত ছবি ছড়িয়ে পড়ছে ওয়ালে ওয়ালে
যত ছবিতে ভরে যাচ্ছে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ
টিভি কাগজ
যত ছবি আঁকা আছে মগজে,
যত রাগ
যত ঘৃণা ছবি হয়ে ফুটে আছে
সেইসব ছবি দেখি আর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক
বুকে চাপা '৪৭, '৭৯, ২০০২-
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
স্মৃতি আর প্রলয়ের মাঝামাঝি
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।
মানুষের দেশ গড়ে আমাদের
নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসুক।