তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম , সময় হবে একটু ?সে সমস্ত কাজ ফেলে এলো ।
সেই আসার আশা ছিল মনে
আবার ভাবনাও ছিলো সঙ্গে ।
হঠাৎ করে ডাক পাঠালে কি সাড়া পাওয়া যায়? বৈশাখ দুপুরে চাতক তো কতবার জল চেয়েছে, বৃষ্টি এসেছে কি !
কিন্তু আমি পেলাম ।
চেনা দরজায় কড়া নাড়লে সবসময় দরজা খোলে না ।
সে দরজা খুলে চোখ তুলে তাকালো ।
যেমন তাকায় ভুট্টার ক্ষেতের মধ্যে থেকে কিসানি
তার স্বচ্ছ চোখ তুলে অপরিচিতের দিকে।
সে চোখে প্রশ্ন , কৌতূহল , কৌতুক , বিস্ময় ।সবার রং এক ইজেলে মেশা।
ভোরের মাচায় গায়ে হিম জমা রোয়াওলা সবুজ শসার মত স্বচ্ছ মুখ ।
দরজার এক পাল্লা ধরে সে দাড়িয়ে ।
দ্বিধার ভাবনা নেই ,
শুধু যেনো জানতে চাওয়া - কেনো ?
তার মনেও কি কোনো জানার ডানা মেলেছিল ?
তাই চেয়েছিল ?
আমি তখন ওইটুকুতেই মেলার মাঠে হারিয়ে গেছি।
ঘূর্ণি , নাগরদোলা , ফুলেল মিঠাইয়ের গল্পের ভিড় মাথায় ।
সে কথা বলি , নিজেই হাসি , নিজেই ভালোলাগায় হারাই ।
কিন্তু সে কি চেয়েছিল মেলার খবর ?
হয়তো চেয়েছিল
জানতে, নদীর কথা ।
শুনতে ,
বেড়া ভেঙে ওঠা গাছেদের গল্প ।
ধুলো ওড়া পথে কতদূর হাঁটা যায় তার হদিশ ।
ভারী দরজার শব্দে
তাকাই দেখি
বন্ধ দরজা কঠিন ভাবে তাকিয়ে ।
সেই চোখ , সেই মুখ কোথায় ?
অন্ধকার আকাশ কাশ ছুঁয়ে যায় আরো নিচু হয়ে ।
স্খলিত পায়ে এগোই নাকি পিছোই ?
ঝেঁপে আসে কথারা ।
ছররা গুলির মত এক এক করে আঘাত করে বলে যায় - কেনো বলতে ভুলে গেলে ?
ঘরে ফিরি ,
স্বাভাবিক ভাবে সব করার চেষ্টা করি ,
আরো অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে কাজে।
হঠাৎ করে চুপ নয় বেশি কথা বলে ফেলি।
নিজেকেই নিজে তুলি কাঠগড়ায়।
মধ্যরাত্রি ব্যর্থ চাঁদ লোকায় ফ্ল্যাটবাড়ির ছাদে।
এক রয়ে গেলো এই থাকা।
গুছিয়ে সাজিয়ে এগোনো হলনা কোনোদিন।
বুকের কথায় চিরকাল চললো পা আর হাত। কিছুই হলনা ।
একেবারেই কি কিছু হলনা ?
বাসা বাঁধা গেলো যে কারুর মনজমিনে ।
কথা ছিলো না কিন্তু আশ্রয় জুটে গেলো । আসল সেই লেখা - " ধাবমান শেষ ট্রাম , জলের কিনারে নিচু জবা সকলেই চেয়েছে আশ্রয়।"