বিনু... সাধারণ গ্রামের ছেলে
মোরগের ডাকে ঘুম ভাঙে সকালে
আগুনে যখন জ্বলে শুকনো পাতা
ঠোঁট-কোনে থাকে লেগে মায়ের গরম চা
তারপর টিউশন--- পায়ে হেঁটে হেঁটে
মুখে আম-আঁটির ভেঁপু পথে যেতে যেতে
পড়া শেষে পকেটে শিউলি ফুল নিয়ে
পাতিহাঁসের মাঝে ঝাপ কাঁঠালের ডাল বেয়ে
তারপর চোখ করে রক্ত চলে ইস্কুল
ডাং-কলি বিকালে কিংবা ধরে ছোট্ট বুলবুল
দাদুর কাছে রামায়ণ শোনার লোভে
সন্ধ্যায় বাড়ী ডুবন্ত সূর্যির কাঁধে কাঁধ রেখে
গভীর রাতে নেভে মোম-আলো যখন
রঙ্গীন জোনাকির পিছু পিছু বিনু ছোটে তখন
সবুজ ঘাসের বুকে রেখে বুক শিশির শরীরে
তারপর বিনু যায় ঘুমিয়ে ঝিঁঝিঁর গান শুনতে শুনতে
বিনয়... অনে...ক বড়ো, বিয়েও করেছে
গ্রাম আজ বহুদূরে কলকাতা শহরে সে এসেছে
এখন ঘুম ভাঙে দামি ঘড়ির চিৎকারে
কাজের মাসিমা কফির পেয়ালা দেয় এগিয়ে তার হাতে
তারপর ছুঁড়ে দেওয়া কাগজে মন বসে
দিঘির বদলে শরীর আজ ধুয়ে যায় সাওয়ারে
পকেটে কলম রেখে যায় ছুটে অফিস গাড়ি
বিকালে ফিরে গেমস কম্পিউটারে ছেলে যখন সঙ্গী
সিরিয়াল দেখে এখন সে কাটায় সারা সন্ধ্যা
গভীর রাতে বিনয় দেখে চারিপাশ সব কেমন ফাঁকা
শিরীশ-সজনের বদলে স্ট্রীট লাইটের সারি
ছোটো ঝোপের জায়গাতে বিশাল বিশাল বাড়ি
কোয়েল কোথায়, মোটরের যে বিরক্তি বাঁশি
জুঁই ভুলে বাতাসে এখন শুধু ধোঁয়া-গ্যাসের হাসি
তবুও হোম থিয়েটারে গান সে শোনে ঝিঁঝিঁ
সবুজ গদিতে পিঠটি রেখে আজও পায় পুরানো স্মৃত