প্রেমিকা হতে চাই শুধু
প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাই।
বয়সের সাথে সাথে যতই
জং ধরুক সারা শরীরে,
তখনও আমি শুধু তোমার
প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাই।

মেয়ে মানুষের প্রেম বড় অদ্ভুত ধরনের।  
শুধু চাই শুধু চাই শুধু চাই.!!
প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাওয়া তাদের মন।
মেয়েরা রাগ করে,মান-অভিমান করে,
ছোট ছোট আবদারের নদী তৈরি করে,
অভিযোগ করে অনুযোগ ও করে থাকে,
কত অঙ্গভঙ্গীতে বোঝাতে চাই
আমি তোমার প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাই।
শুধু ভালোবাসা যুক্ত ভালোবাসা টা
পাওয়ার জন্য কি না করতে চাই।

পরন্তু,
মেয়েরা গম্ভীর কণ্ঠে থমকে যায় তখন,
যখন আপনার তাড়াতে বোঝাতে চান
তুমি এখন সেই আগের প্রেমিকা নও,
নও সেই আগের উচ্ছ্বসিত নারী।
তুমি এখন গৃহ বন্দী গৃহ বধূ
মেয়ের মা, শ্বাশুড়ির বৌমা,
আমার ঘরের লক্ষী স্বয়ং সম্পূর্ণা।

সেই তাড়াতে মেয়েরা তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছা
প্রেমের ভাব প্রকাশ
চাপা দিয়ে দেয় লুকিয়ে ফ্যালে
বরং হারিয়ে ফ্যালে না।
লুকিয়ে ফ্যালে শত সাংসারিক ব্যস্ততায়
নিজের মনের প্রেমের ভাবমূর্তি।

মাঝে মাঝে দূরে কোথাও
ঘুরতে চাই, বেড়াতে চাই
বালিশের তলায় চিরকুট চাই।
অফিস থেকে এসে পেছনে জড়িয়ে
ধরা ভালোবাসা টুকু চাই।
কানে কানে শুরশুরি দেওয়া ঐ
নিঃশ্বাসের শব্দ তরঙ্গ অনুভব করতে চাই।
প্রিয় ফুল এনে দিয়ে
অবাক করা মুহূর্ত গুলো পেতে চাই।
তুমি অফিস শেষে যখন
হাত-পা ছেড়ে বিছানায় শুয়ে পড়ো,
সেই ক্লান্ত শরীরে ক্লান্ত টুকু
হামাগুড়ি দিয়ে আহরণ করতে চাই।
ঠোঁটের আবরণ দিয়ে মর্মস্থলে
খনন করতে চাই গভীর সমুদ্র।
শুধু প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাই।

হঠাৎ চুল গুলো টেনে দেওয়া
তোমার রাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
তোমার ঘুমের ঘোরে বুকের উপর,
হাতের নখ দিয়ে কেটে কেটে
ভালোবাসি তোমায় লিখতে চাই।
যান্ত্রিক জীবনে শত ব্যস্ততার মধ্যেও
সময়ে দু-এক মিনিট কল করে
একটু কথা বলা চাই।

তুমি ধমক সুরে যখন বলো,
কি করছো,এসব কি শুরু করেছো.?
তখন চুপচাপ সেই মেয়েটি
প্রেমিকার রূপ চাপা দিয়ে দেয়।

তোমার চাওয়া পাওয়া গুলো
ঐ প্রেমিকা গৃহ বধূ মন তালিকায় লিখে রাখে।
কখন তুমি আসবে, কলিং বেল চাপ দেওয়ার
আগ মুহূর্তেই দরজা খুলবে।
তুমি দেখবে তোমার পছন্দের
মেরুন রঙের শাড়ির ভাঁজ ভেঙে, খোলা চুলে
সেজে দাঁড়িয়ে আছে তোমারই অপেক্ষায়।
তোমার চোখে চোখ পড়বে,
এই ভালোবাসা পেতে চাই।
মেয়েরা একটু লাজুক ইন্দ্রিয় বিলাসী
প্রেমের অত্যাচার চাই।

খুব কঠিন হয়ে যায় প্রেমিকা খোঁজা
খুব কঠিন মেয়ে মানুষের মন বোঝা।
এই তো দেখলাম হাসিখুশি
এই ভালো এই খারাপ।

মোদ্দা কথা হলো,
যে পুরুষ নারীর মন বুঝতে পারে
তার কাছে গণিতের সরল সমীকরণ
সমাধান অতি সহজ।
মেয়েরা শুধু প্রেমিক চাই,
প্রেমিকার রূপ দিতে পারলেই
পৃথিবীর সমস্ত সুখ তারই কপালে জোটে।

একটা সময় যখন ঘড়ির কাঁটার উল্টোদিকে
চাইলেও, সেই প্রেমিকাকে পাওয়া যায় না।
গৃহ বন্দী গৃহ বধূ এক আনা নয় দু আনা নয়
চেয়ে এসেছে গলা ভর্তি সোনার হার,
চেয়ে এসেছে হাত ভর্তি সোনার বালা।
কেনই বা চাইবে না,
তুমিই তো তোমার প্রেমিকার রূপ কে
রূপান্তর করেছো নববধূ বেশে থাকতে।

ইতিহাস দেখে বলা যায় কোন প্রেমিকা
আজ পর্যন্ত সোনার হরিণ চাই নি
চায়নি সোনার হার,
হুম চেয়েছে শুধু ডজন ডজন
কাঁচের চুড়ি, চেয়েছে শুধু কানের দুল,
চেয়েছে শুধু মুঠো ভরা একগাদা ভালোবাসা।
চেয়েছে শুধু মুখ ভর্তি তোমার
স্নিগ্ধতা হাসি টুকু।

হয়তো তোমার কাছে এসব আবেগ ভালোবাসা
সস্তা হতে পারে, কিন্তু ওর কাছে?
ঐ দিনে রাতে খাটা গৃহিণীর কাছে?
সাত পাকে বাঁধা ঘরনির কাছে?
এক বিশাল আকাশ অমূল্য রতন।

খুনসুটির মাঝে যে ভালোবাসা পাওয়া যায়
হাজার লাখো টাকার বিছানায় শুয়ে
এমনও অনেক মানুষ আছে এই পৃথিবীতে,
সুখ নেই, নেই শান্তি, নেই ভালোবাসা।
শুধুমাত্র এক ছাদের নিচে থাকা প্রয়োজন বলে
শুধু রাত পার করা।

বড্ড অভিমানী মেয়েদের জাতকে
প্রেমিকা বানানো খুবই সহজ,
প্রেমের মোড়কে বেঁধে রাখা অতি সহজ।
কিন্তু সরল অঙ্কটার শেষে শূন্য বা এক
পাওয়া অবশেষের কাজটি,
বরং আমরাই জটিল করে বসি।
আসলে যোগ বিয়োগ গুণ ভাগ
ঐ যে কয়েকটি বন্ধনী চিহ্নের
সঠিকভাবে ব্যবহার না জানি বলেই
মেলাতে পারি না।
ফেলে রাখি কোন সাদা কাগজের
অমিল অঙ্কটার মতোই সেই প্রেমিকাকে।

যদি আজীবন ঐ সংসারী কে
প্রেমিকার মতোই আষ্টেপৃষ্ঠে রাখতে পারো
তবে তো তুমি জয়ী
তুমিই তার আপাদমস্তক
রাজার রাজত্বের অধিকারি।
শুধু তোমার প্রেমিকা হয়ে থাকতে চাওয়া এই মন,
শুধুই তোমার প্রেমময়ী প্রেমিকা তোমাকে চায়।
****************************
১লা ডিসেম্বর ২০২১ইং।