নিস্তব্ধ কোন গভীর রাতে,
যখন অবাধ্য স্রুতের মত চলতে থাকা
ঘড়ির কাটা আমাকে সচেতন করে দেয়।
তখন উপলব্ধি করি,
আর অনুভব করি রূপান্তর।
যে রূপান্তরে,
শুকনো গাছে ফুল ফুটে,
ক্ষুধার্ত মুখে হাসি ফুটে,
শীতার্ত দেহ একটু উষ্ণতা খুঁজে,
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে জীবনকে খুঁজে।
সে রূপান্তরে,
তোকে কাছে টেনে নিয়েছিলাম।
আর সেই প্রক্রিয়ায়,
যে প্রক্রিয়ায় তোর নিকট
শুন্য থালা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম,
ক্ষুধার্ত ভিখারিনীর বেশে।
যদি ফিরিয়ে দিতি,
তাহলেও চলে যেতাম
পাশের বিস্কুটের দোকানের সামনে বসে থাকা
লোমহীন নেড়ি কুকুরটার মত
লেজ নিচু করে আত্মসমর্পণ করে,
যেন আর কোন দিন ফিরব না।
কিন্ত তুই তো ভরে দিয়েছিলি সেই শুন্য থালা
তোর ভালবাসায়।
কাটিয়ে দিয়েছিলি বহুরাত
ভাসমান চাঁদটিকে নিয়ে গল্প করে,
গায়ে চাঁদের আলো মেখে,
আমার কামহীন ভালবাসাকে জড়িয়ে ধরে,
আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ছিলি রাতের পর রাত।
ঝিলের সচ্ছ পানি যেভাবে চাঁদটিকে ধারন করেছিল,
সেভাবেই একে অপরকে ধারন করেছিলাম,
তোর ওষ্ঠে আমার ওষ্ঠ রেখেছিলাম,
সমর্পণ করেছিলাম দেহ মন প্রান।
কিন্ত হঠাৎ বুকটা যেন কেমন করে ওঠল।
একটা বুলেট এসে ছারখার করে দিল
আমার কামহীন ভালবাসাকে।
ঝাঁজরা করে দেয় মাংসপেশি,হাড়গোড়
কর্মক্ষম হয়ে পড়ে কামহীন ভালবাসার হৃৎপিণ্ড।
সব ভেসে যায় রক্তের সাগরে।
ওরা তোকে সেদিন কি করেছিল ?
ভালবেসে চুমু খেয়েছিল ?
না হায়েনার মত ওষ্ঠে দাঁত বসিয়ে আনন্দ মিছিল করছিল ?
তোকে কি আদর করেছিল ?
না সারাদেহে কাম খুঁজে বেড়াচ্ছিল ?
আমার মত করে বুকে মাথা রেখেছিল ?
না বিকৃত নখ দিয়ে আঁচরে
স্তন গুলোকে ফালি ফালি করে দিয়েছিল ?
তোকে নিয়ে কি স্বপ্ন দেখেছিল ?
না ধর্ষণের খেলায় মেতে ওঠেছিল ?
তোর চুল থেকে কি গন্ধ নিয়েছিল ?
না ঝং ধরা ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলেছিল ?
তোর সুন্দর হাসি দেখার ধৈর্য কি ওর ছিল ?
না এসিড ছুড়ে মেরেছিল ?
তোর চোখে কি চুমু খেয়েছিল ?
না শকুনের মত ঠুকর মেরেছিল ?
কপালে কি ওষ্ঠ রেখেছিল ?
না ঠিক শকুনের কাজটাই করল ?
তোকে নিয়ে এখন বই মেলায় যায় ?
মুক্ত মঞ্চে নাটক দেখতে যায় ?
গ্রিন রোডের জ্যামে রিকশায় বসে বাদাম খায় ?
নদীর পাড়ে হাঁটতে যায় ?
তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে যায় ?
না বোড়া চাচার ময়নাটির মত এখনো খাঁচায়
তালা মেরে রাখে ?