ট্রেনের চাকায় শরীরটা
একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে।
মুণ্ডটা ছিটকে গিয়ে পড়েছে,
কুড়ি ফুট দূরে একটি পুকুরের পাড়ে।
প্রথমে মনে হয়েছিল, এটা একটা এক্সিডেন্ট,
কিন্তু পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে
একটি সুইসাইড নোট।
তাতে লেখা ছিল-
'আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী কোনও ব্যক্তি নয়,
দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা।
চেয়েছিলাম, স্বাধীনভাবে বাঁচতে, কিন্তু
যেখানে দু-দিন ছাড়াই কারখানায় লক-আউট,
বিনা কারনে কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়, যেখানে
দু- মুঠো অন্নের জন্য নিজের স্ত্রীকে
অন্যের কাছে বন্ধক রাখতে হয়, যে দেশে ভিক্ষার
জন্য রাস্তায় দাঁড়ালে সহানুভুতির বদলে জোটে
রাশি রাশি বঞ্চনা, যে দেশে সন্তানের চিকিৎসার খরচ
যোগাতে না পেরে বাবাকে চোখের সামনে তার সন্তানের
মৃত্যু দেখতে হয়, যে দেশে সর্বহারার ভিটেটুকু
লুঠ করার জন্য চলে দলীয় রাজনীতি,
সেখানে স্বেচ্ছামৃত্যুই শ্রেয়।
ইতি- কাঞ্চন সরকার। বয়স-৫০ '।
সুইসাইড নোটটি পেয়ে পুলিসের চোখে হাসি ফোটে, কারন,
তাদের অন্তত একটা দায়িত্ব কমলো।
আর যাই হোক, কাউকে তো আর গ্রেপ্তার করতে হবে না।
হয়তো মনে মনে ভাবলো-
একটি বেওয়ারিস লাশের জন্য ভেবে কি দরকার।
যদি মন্ত্রী বা এ.মে.লে হতো তাহলে না হয় ভাবা যেতো।
ভালো কাজ করে প্রোমোশন পেতুম। কিন্তু
রাস্তার ভিখারী মরলে আমাদের কি লাভ বলুন তো?