বিবেকহীন মনুষ্যত্ব ফুটে ওঠে তখনই, যখন দেখি
সদ্য দুর্ঘটনায় আহত কারো ভাই, বোন, সন্তান বা কারো
নিকট আত্মীয় রাস্তার পাশে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ নিয়ে
যন্ত্রণায় ছটফট করছে আর ঠিক তার পাশ দিয়েই দুরন্ত
গতিতে ছুটে যাচ্ছে শহর অথবা গ্রামের নামকরা ডাক্তার,
ইঞ্জিনিয়ার, উকিল বা কোনও ভদ্র, সভ্য শিক্ষিতের এ.সি ডিলাক্স গাড়ি।
ধর্মীয় গোঁড়ামি দৃশ্যমান হয় তখনই, যখন কোনও মুসলমান ভাই
হিন্দু দেবতার চরণে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করলে বা কোনও হিন্দু ভাই
মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়লে সমাজের চোখে তারা হয়ে যায় বিশ্বাসঘাতক।
ঠিক তখনই কুসংস্কারের ভয়ঙ্কর রুপ আরও স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে,
যখন কোনও সহায় সম্বলহীনা নারীকে 'ডাইনি' অপবাদ দিয়ে
উলঙ্গ অবস্থায় গলায় জুতোর মালা পড়িয়ে
গোটা গ্রাম ঘোরানো হয় এবং সেইসঙ্গে চলতে থাকে প্রবল অত্যাচার।
'লোভ' নামক ভয়ঙ্কর দানবের শাসন আজও আমাদের রক্তে রক্তে।
তাই, যখন দেখি, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য কোনও ভাই তার দাদাকে,
কোনও ছেলে তার বাবাকে বা কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা
অন্য কোনও এক রাজনৈতিক দলের নেতাকে গুলি করে বা কুপিয়ে হত্যা করে,
তখন, লজ্জায়, ঘৃণায় আমার মাথা হেঁট হয়ে আসে।
নিজেকে তখন সভ্য সমাজের নাগরিক ভাবলে কষ্ট হয়।
বছর বছর ফেল করে আসা ছেলেটি যখন সরকারের
কোনও গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে থাকে আর অপেক্ষাকৃত
মেধাবী গ্র্যাজুয়েট ছাত্রটি যখন খবরের কাগজ বিক্রি করে
একটা ভালো সুযোগের অভাবে,
তখন আরও অনেক বেশি করে প্রকট হয়ে ওঠে
আমার মানসিক যন্ত্রণা।
মনের ক্যানভাসে ফুটে ওঠে হাজারো প্রশ্ন,
কিন্তু কি-ই বা করার আছে।
তবু, আমি লিখে যাই আর ভাবি
একদিন সত্যিই হয়তো আমরা এই
বিবেকহীন মনুষ্যত্ব, ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, লোভ ও
অমানবিকতার বিষাক্ত খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারবো
আর দীপ্ত কণ্ঠে বলতে পারবো-
WE ARE PROUD OF OUR COUNTRY.
WE ARE PROUD OF OUR PEOPLE.
WE ARE PROUD OF OUR ADMINISTRATION AND
WE ARE PROUD OF OUR GOVERNMENT.