একদিন সে বলেছিলো…
আমি তোকে ভালোবাসি….
পর পর টানা চার মাস পেরিয়ে গেলো কিন্তু আমি বোঝতে পারি নি…
ভালোবাসা কারে কয়….
কলেজ ছুটি হলে সে বন্ধুদেরকে ছেড়ে একা বাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকতো…
একের পর এক বাস পার হয়ে যেতো…
যতোক্ষণ না আমি আমার প্রেক্টিকাল ক্লাশ শেষ করে বাস স্ট্যান্ডে পৌছাতাম …
বাসে চড়ে বসতো না….
জানি না সেটাই ভালোবাসা ছিল কি না…
ক্লাশের কপিগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করতো, বুকে জড়িয়ে ধরতো…..
তাতেও কি ভালোবাসা হয়?......
সে তো একদিন বেখাপ্পা এক অসহায়তার মধ্যে পরেছিলাম…
আমার ক্লাশ শেষ হওয়ার পর এসে দেখি শেষ বাস চলে গেছে……
আমি তো একা ছিলাম না, আমার জন্য ঐ মেয়েটিও দাঁড়িয়ে ছিলো…
আমাকে দেখে মেয়েটি যেনো সিকিউর ফিল করছিল….ঐটাই কি ভালোবাসা?
যাকে ভালোবাসা যায়, তাকেও কি ভরসা করা যায়?
বুঝতাম না কিভাবে কোন অপার্থিব জিনিসটাকে ভালোবাসা বলে?
কখনো দেখতাম আমার ভালো লাগা বা না লাগা বিষয়গুলো ওর কাছে প্রাধান্য পেতো
ফুচকা খেতে ভালোবাসি না বলেই ….
যে মানুষটা এতো হাপুস হুপুস করে এত্তগুলো ফুচকা খেতে দেখতাম…
সে নাকি ফুচকা খাওয়াই ছেড়ে দিয়েছিল…
এসব কি ভালোবাসা?
ক্লাশে, হৈ চৈ করা মেয়েটা যে এভাবে এতো শান্ত হয়ে যাবে, তা তো বুঝি নি…
তাতেও কি রহস্য ছিল তাও তো বুঝি নি সেদিন…
যেদিন আমার হাতের থেকে বইয়ের ব্যাগ নিয়ে আমার পাশেই হাটছিলো…
বুঝিনি সেদিন আমার ভুলের জন্য মেয়েটি নিজের উপরে দোষ চাপিয়ে নিয়েছিলো…
এটাই কি ভালোবাসা?
মেয়েটিকে দেখে মনে হয়েছিলো আমাকে সাহায্য করতে ভালোবাসে,
হয়তো একই ক্লাশে পড়ি তাই সহপাঠী হিসাবে।
পড়াশুনা শেষ করে যখন চাকরী করতে শুরু করি…
তখন দেখলাম আমার বাস স্টপেজে প্রতিদিনই সেও বাসের জন্য অপেক্ষা করে…
আমার বত্রিশ নম্বর বাসেই চড়ে কোথাও যায়…
আমি প্রশ্ন করতেই,মিচকি হেসে বলে একটা কাজে যাই, বলবো না…
সেদিনটা ছিলো রবিবার…
অফিস ছুটি ছিলো বলে বাড়িতে বসে মোবাইল ঘাটছিলাম…আর ওর কথাই ভাবছিলাম…
কলিং বেলের শব্দে দরজা খুলে, আমি হতবাক্…
সামনে দাঁড়িয়ে একটি ছোট ব্যাগ হাতে…জড়িয়ে ধরে আমাকে…
“আমার ভালোবাসা তুমি বোঝ না কেনো, বলো তো?
*****
গদ্য কবিতা**