ঐ যে উমা, ওর চুল গুলো
এলোমেলো
কালো চুলে লালের ছোপ
বড্ডো খসখসে l
সারাদিন আকাশের নিচে
সে বসে থাকে
খড় কাঠামো কুমোরটুলির
ঐ রাস্তার পাশে l
আজ তার খাওয়া জোটেনি
বসে সারাদিন
মা অন্য বাড়ির বাসন মাজছে
ভুলেও ডাকেনি l
পাল দাদু সারাদিন কাজ করে
সে শুধু দ্যাখে
রাতের অন্ধকারে মোমবাতি ধরে
নিপুন তুলির টান l
ভ্রু, চোখের পাতা, মায়াময় চোখ,
চোখের মনি l
ওর মধ্যে সব ঘুরছে আপন মনে
চাঁদ সূর্য তারা l
ওর বস্তিতে কোনো কোনো দিন
খাবার জোটেনা
সে শুধু বসে থাকে রাস্তার পাশে
মা বলেছে l
পরনের জামাটায় শত শত ছিদ্র
সমাজের মতন
গায়ে মুখে ধুলোয় সব ধুলোময়
সবার চোখ অন্ধ l
ঐযে চারচাকা চেপে বাচ্চাগুলো
কেক পেস্ট্রি খায়
সে চাইলে, তাকে তাড়িয়ে দেয়
বড্ড কৃপ্টা ওরা l
সে কখনো কিছু খাওয়ার পেলে
পিঁপড়েদের দেয়
ওরা তাতে কতইনা আনন্দ পায়
সে বুঝতে পারে l
যারা এত লেখাপড়া করে জ্ঞানী,
অন্তরে এত বৈষম্য!
সমাজের এই হাড়চামড়া মূর্তিগুলো
এতটা নির্দয় নির্মম !
এই তো সেদিন যারা তাকে ধরলো
তুলে নিলো গাড়িতে
সব শেষ করে মুখে আদলা ইট মেরে
ফেলে দিলো নালীতে l
পরদিন কিছু লোক জড়ো হলো
তার নিথর দেহটা ঘিরে
মা খুব কাঁদছিলো বাবা নিথর
সমাজ শুধু দেখছিলো l
কিছুদিন পর ওরা সব ভুলে যাবে
কত পার্বতীর কথা মুছে যাবে
নির্দয় এই সমাজটা চেনে শুধু টাকা
মিথ্যে সব বইয়ের লেখা l
আজ সে পুরো মুক্ত, মনের আনন্দে
দেখবে দূর্গা মায়ের পুজো
ধনী গরীবের এই নগ্নতা আর নেই
আজ সে মায়ের কাছে যাবে l