(প্রিয় কবি ও কথক সুনীল দা-কে শ্রদ্ধার্ঘ জানিয়ে )
নোয়াজিয়েলে নেস্লের বাগানে হলুদ-লাল-পাতা-ঝরা হাজার গাছের পরনে সাদা শাড়ী
কপালে সিঁদুর মোছা দগদগে সুন্দর চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে মারনের জলে
অসহ্য নীরবতায় স্থির এক মরালী শিশিরধোয়া শ্মশানের লবঙ্গ ঘি অমৃত ধোঁয়ায়
নিঃসঙ্গতার ঠোঁট চেটে খায় এলোকেশী বৃক্ষের তলে ।
নদীর পাড় ঘেঁষে ঘন বনবিথিঘেরা সিঁথির সুরু পথে হটাত দেখা এক নারী
চিবুকে ১০৮ টি চুম্বনের দাগ দেখে চিনতে পারি তাকে!
নীরা, তুমি ?
সিঁদুর মোছা এই সন্ধায় সাদা বকের ডানামেলে কোথায়
কোন পাহাড়ের কোলে গভীর বনে ছুটে যাচ্ছ তুমি ?
লুকোনো ঝর্ণার পাশে উলঙ্গ মায়াবী জ্যোৎস্নায়
নাচবে কী তুমি আজ স্মৃতির সাথে ?
বিশ্বজগত এক সমাধিভূমি, শুধুই স্মৃতি আর স্মৃতিভাণ্ডার
কখনো গভীর অন্ধকারে নক্ষত্র গুনেগুনে পথ হাঁটা আনন্দ অপার
কখনো বুকের মধ্যে মুখ লুকিয়ে আকাশ ভরা আষাঢ়
সমুদ্রনীল হাহাকার
উত্তর সমুদ্র থেকে উড়ে আসা সাদা হাঁস জ্যোৎস্নাময় মায়াবী রাতে
শুধু এক ছায়া প্রতিধ্বনি ছাড়া কী আছে আর !
তবু,তোমার সাথে আছে অমোঘ স্মৃতি, নীরা
হাঁটুর উপরে থুতনি দিয়ে রঁদার ভাবুক
তোমাকে ছুঁয়ে আছে
স্মৃতি আর মৃত্যুর পাশাপাশি শুয়ে চুপচাপ
একই স্বপ্নে তোমরা দুজন।
বুকের কাছে দুহাত জড়ো করে ধুকধুক
অকপট সন্ধের এই আকাশ
ধুপধুনো সুগন্ধি সুরেলা বাতাসে
শঙ্খধ্বনি আজান ঘিরে সেই মহতি প্রাণ
নাস্তিক দ্বান্দিক আস্তিক কবি ও কথক সবই যে তিনি এখন শুধুই স্মৃতি!
কোন স্তবক নেই সান্ত্বনার
কোন শব্দ নেই বেদনার
নিস্তব্ধ নিবিড়
ঢেউ, শুধু ঢেউ আর ঢেউ, ফেনায়িত তীর ।
কেউ কথা রাখেনি, কেউ কথা রাখেনা, নীরা
শুক্লা দ্বাদশীর দিনে কোন বোসটুমি শোনায়নি তাকে কোনদিন সেই আগমনী গানের অন্তরা
নাদের আলিও নিয়ে যায়নি কোনদিন তাকে তিন প্রহরের বিল দেখাতে
তবু দেখেছেন তিনি সাজানো পশরার সারি
বন বাদাড়, কাদাপায়ে হাঁটাপথ
চিলের ডানায় উড়ে উড়ে আসল নকল বাড়ী
নদী ও নারী আর তোমাকে, নীরা ।
কিন্তু ফেরার পথে বড়োই ক্লান্ত তিনি কোথায় হোঁচট খেলেন ?
কোন ছায়াস্রোতে ভাসতে চাইলেন
অলৌকিক রহস্য ভিক্ষায়
কোন অনুভবে ঈশ্বরস্তবে ফিরে গেলেন- বলে তো গেলেন না !
না নীরা, কেউ কথা রাখেনি, কেউ কথা রাখেনা !
নীললোহিত সনাতন পাঠক নীল উপাধ্যায় সুনীলও না !
নোয়াজিয়েল
৪\১১\২০১২