আজ বঙ্গ দেশের চারদিকে ঘুরে তাকালেই দেখা যায় হাতে একটি বিড়ি বা এক হাতে গাজা কেঁটে কেঁটে হুক্কার ভিতর ভরে উপরের দিকে ঢেউ খেলে ধোঁয়া ছাড়ছে। হঠাৎ মাঝে মধ্যে দেখা যায় কারো পক্যাট হতে ম্যানিবেগ চিন্তাই হয়ে গেছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই সবের মূল কারণ হচ্ছে নেশা। তাই বঙ্গ দেশে শান্তি আনার জন্য পহেলা নেশাকেই তাড়াতে হবে। হাজার হাজার বীর যুবকরা তা গ্রাস করে নিজের জীবনটাকে বিমলিন করে ধূলোর সাথে মিশে দিচ্ছে। তাই মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বা বীর যুবকদের কাছে মম আবেদন এবং সহস্রবার তাদের প্রতি অনুরোধ এ দেশ হতে নেশা প্রতিকারের জন্য যেন মাথায় একটু চিন্তা নেয়। পৃথিবীতে এমন কোন বড় ঝড় নেই, যা ইচ্ছা করলেই  তরুণ-যুবকরা লঙ্গিতে পারে না। কিন্তু এখানে সব যুবকরা শেয়ালের লেজের নাড়া খেয়ে দিবা-নিশি ঘরের দরজা বদ্ধ করে আঁধার ঘরে বসে দোয়ারের নিরাপত্তা দেয়। যাকে আমরা বলে থাকি, দোয়ার-দ্বারি।
ওরে যুবক! তোমরা দেখ শত-হাজার মায়ের স্বপ্ন থাকে নিজের সন্তানকে কি করে মানুষ করা যায়। যেমন তোমার মায়ের স্বপ্ন। কিন্তু সেই নিরীহ সন্তানরা শহরে এসে নেশার বোতল নিয়ে যখন ঠেক দিতে নামে, তখন কেমন লাগে? সেই স্বপ্ন ভরা মায়ের বুকটা কাঁচের মতো ফাটল ধরে যেখানে আর জুড়া দেয়ার মতো ব্যাবস্থা নেই। কথাই আছে পুঁড়া মাটি জুড়া লয় না। কেন ভেঙ্গে যাবে আমার মায়ের বুক? কেনই বা বঞ্জিত হবে আমার নিরীহ ভাইয়েরা? আর কেনই বা ধর্ষিতা হবে আমার ফুলের মতো নিষ্পাপ বোনেরা? এই জবাব কে দিবে? আমি জানি এ জবাব কেহ দিতে পারবে না। কারণ তাহলে তাদের কালো কাপড়ে ঢাকা মুকুস খোলে যাবে। রাজ সিংহাসনে বসে পায়ের উপর পা রেখে শাসন করতে পারবে না। কিন্তু যুবকরা –এখন সমস্যা কার? সমস্যা তোমার আর আমার। আমরা নিরীহ যুবকরা কি পারব, এই যে নেশার কাল প্রভঞ্জন এসেছে তাহা লঙ্গিতে? আমরা পারব কি পুষ্পিত কাননে অন্য একটি ফুলকে বাঁচাতে? আমাদের পারতেই হবে, আমাদের এই ঝড় লঙ্গিতেই হবে, আমাদের নিরীহ ভাইকে এবং ধর্ষিতা হতে মম বোনকে বাঁচাতে হবেই।
_______________________________________________________________________________________________


চতুরদিকে নেশার দল, সন্ত্রাসীর আড্ডা দিয়ে
ওরে যুবক! লঙ্গিতে কি পারবি নিজ প্রাণ বাঁচিয়ে;
পারবি পৌঁছাতে- কর মাখা পথে
পারবি কি পৌঁছাতে মৃত্তিকার স্তুপ পৃথিবীতে।
জোয়ার ফাঁক- দলে দলে উড়ছে নেশার শুকনি
সেই জোয়ারে পা, কেমনে ধরবে শুনি?
এ দেশেও কি মরিত! প্রিয় হারা শব্দ করুণ
জেগে উঠিত যদি বঙ্গ- সব তরুণ।
নেশাকোর, নেশা গ্রাসে কি পাস কেমন সাধ?
নেশার জন্য কেনইবা চালাস ভিখারির উপর বিবাদ।
তাই মুক্তির আরাধনে—
নর-নারী মিলে সব চলো চালিয়ে অভিযান
লঙ্গিয়ে সন্ত্রাস-নেশা-বেঁচে র তো প্রাণ।
তরুণ-তরুণী আজ উর্ধ্বে তুলে শির মুক্তি সুরে
লঙ্গিয়ে চলো জয়ধ্বনি গান কন্ঠ ধরে জোরে।
ভয় পেয়ে আর কি হবে? লুকিয়ে দিবা-শর্বরী
বদ্ধ ঘরেই মরবে ধোকে! ওরে দোয়ার দ্বারী।
ছুঁড়ে পাথর, ছুঁড়ে ইট-প্রভা আঁধার খেলায়
নেশাদের মুখে দিয়ে লাথি, চলো অভিরাম মেলায়।
বেরিল সব যুবক দলে দলে নেমে রাজপথে
ওরে এ কেমন প্রয়োল্লাস;
উড়বে দস্যুরা।– শূন্য উঠে মুক্তি রণ-বাত্যে।  

ছল-চাতুরি আজ নীরব যুবক দলে পরে ফেরে
অসহায় হয়ে জীবন দিচ্ছে বেচারায় তেড়ে।
বাঁচতে হবে! তাই নৃত্য প্রভাত আনছে কেহ
পথধূলি, জয়ন্তী কষ্ট, বহ্নি আঁখি, রক্ত দেহ।
লুট-তরাজ নেশা গ্রাস আর ত্রাস উঠবে
ওরে, যুবক সব এক হয়ে জাগিছে ঠগবগিয়ে।
বাঁচতে যদি চাস তুই, নেশাকে দে লাথি
নয়তো নিববে এবার হায়াৎ- স্রষ্টার দেওয়া বাতি।
ভেবেছিনু মন বসে বসে গাহিব মধুর এ গান
নেশা কেন হত্যা করবে? হাজার যুবকের প্রাণ।
কে আনে? কে করে বিক্রি? রহে কোন অরণ্যে?
জানিস রে যুবক, সেই বার্তা বাণী?
পুষ্পিত কানন রক্ষার আশা- চালাও হানাহানি।
গাহিয়া গান, আনিয়া বান, উর্ধ্বে তুলে শির,
চঞ্চল হয়ে ছুটিয়া চলি ল হ ছেড়ে ভয়-বীর।
চলছে এবার—
চলছে তুরগ দৌঁড়ে চলছে অতি ক্ষুর ধারা
মুক্তির গান বাঁজিল উঠে সমস্ত বসুন্ধরা।
ঈশান হতে অগ্নি- বায়ু হতে আইড়ে আরো
বাঁজিল কন্ঠ মুক্তির প্রাণ নিচ-উদয়
ভয় নেই ওরে পথগামী চলো নৃত্য উদয়।
বাঁজাইয়া বীণা-মাদল ব্যাকুল- চারদিকে
ভয়কে ঢেকে দিলুম পৃষ্ঠ তলের বুকে।
নেশা-সন্ত্রাসী দেখ নিরীহ নজর হয়ে চেয়ে
সব যুবক ছুটিল ওরে-সব বাঁধা-বিন্ধ্যা লঙ্গিয়ে।




রচনাঃ ময়মনসিংহ বড়বাড়ি