তুমি বললে মা বাড়ীতে নেই, এসো গল্প করি —
অত:পর: আমরা কাছে আসার নাম করে শরীর ছুঁলাম।
তোমার উষ্ঠের পাশে পুষ্পতুল্য তিলটি বাড়িয়ে দিয়েছিলো আমার চুম্বনের ইচ্ছেশক্তি।
বুঝতে পেরে লজ্জায় গ্রীবা বাঁকিয়ে অন্যদিকে চোখ ফেরালে তুমি,
লজ্জা নারীকে রূপসী করে তোলে;
তোমাকে তারও অধিক রূপসী...
আগুন নিয়ে খেলতে কারনা ভালো লাগে!
পুড়ে যাওয়ার ভয় তোয়াক্কা না করে আমরাও খেললাম।
সেই খেলাতে তোমার চিবুক থেকে নূপুর-পা অবধি ছড়িয়ে পড়লো সুখের স্ফুলিঙ্গ।
— হঠাৎই তোমার মায়ের অসুস্থ আগমনে
আমরা মাংশের মানচিত্র থেকে ছিটকে পড়লাম দু'জন দু'দিকে।
প্রথমে তোমার মা, তারপর প্রতিবেশীর কান পেরিয়ে সমাজ... আমাদের কথাটা ছড়িয়ে পড়লো বাতাসের গতিতে।
তোমাদের দু'বাসা পরের শিউলী আন্টি,
যার লক্ষ্মী ছেলেটি রোজ রোজ স্কুল যেতে তোমাকে টিজ করতো
সেও মুখে দুর্গন্ধের ভাব এনে বললো,
'ছি: ছি: ঘরে মরদ এনে এইসব...?'
লজ্জায় ঘৃণায় অপমানে তুমি স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিলে,
বন্ধুদের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখলে না;
না না ভুল বলেছি, রাখতে চেয়েও পারলে না।
ওরা সবাই একবার এসেছিলো খোঁজ নিতে
— 'এই সব অলক্ষ্মী মাগিগুলোই আমার অবুঝ মেয়েটার মাথা খেয়েছে, এখন আবার নাটক দেখতে এসেছে...'
তোমার মা ধুর ধুর করে তাড়িয়ে দিলো তাদের।
কোথাও কেউ নেই, ভীষণ অন্ধকার একঘরে
একবুক অপমান আর নীরব কাঁন্নাতে
সংগোপনে ভেঙে চলেছে তোমার পাঁজর।
সতেরো বছরের কিশোরী বয়সে কাঁধে তোলা সেদিনের দুর্নাম বয়ে বেড়াতে বেড়াতে তুমি আজ
নির্জীব আর জরাজীর্ণ চব্বিশে এসে দাঁড়ালে।
তোমার এ বেড়ানোর ইতিরেখা কে টানবে মিহি?
সেদিন মাকে তোমার কথাটা বলতেই,
বললো— ও পাড়ার জইল্লার মেয়ের কথা বলছিস তো?
ছি ছি পাড়ার বদনাম! ওই নষ্টা আমার ঘরে তোলা যাবে না। শুনেছি কোন একটা লম্ফটের সাথে...,
আমার চাঁদের মতো কলঙ্কশূন্য ছেলেটার জন্য কি মেয়ের অভাব পড়েছে?