এই সেই পথ, কত চেনা
কতকাল ছিল ভাঙাচোরা
জীবনের স্মৃতির মতন
টুকরো টুকরো হয়ে ভাসে
ঝরে পরে মনের দেয়ালে।
প্রতিটা গলির মুখ, ডাকে
শোনাতে চায় বিগত সুখ
শিউরে ওঠে লোমের কুপ
আনমনা হয়ে উঠি আমি,
এই সেই পথ, কত প্রিয়
প্রতিদিন বিদ্যালয় যাত্রা,
ধুলায় কাঁদায় মাখামাখি
একদা বন্ধুর সাথে রোজ।
পথ পাশে ঘুড়ির দোকান
নানারুপ নাটাই ঝোলানো
কত যে শখের কারবার,
চোখজুড়ে সেই সব দৃশ্য
শৈশব শেষে কৈশর কাল।
এই সেই পথ, কত ব্যাস্ত
হাঁটতে হাঁটতে হারিয়েছি
দুপুর বেলার রোদে ঘেমে,
হইতাম ইবনে বতুতা
নদীর মতন খুঁজতাম
যেথায় মিলেছে পথখানি
কোন সে বিশাল রাজপথে।
এই সেই পথ, কত রুপে
সারাটা বছর দেখি তারে,
ডুবিয়া থাকিত পথখানি
প্রচন্ড বর্ষায়, বহু দিন
পা ডুবিয়ে ময়লা পানিতে
কত দুর্ভোগের উৎসব।
রোযার মাসে শহুরে হাট,
ছোলা পেঁয়াজুর দোকানীরা
বসে রোজ বিকেল বেলায়
এই সেই পথ, স্মৃতি মাখা
ঈদগাহে বাবার পাশেতে
নামাজের পাটি বিছায়েছি।
চায়ের দোকানে বসে বসে
আড্ডার কত যে সন্ধ্যা রাত্র
বন্ধু দের আবেগী বিতর্ক
কতদিন শুধুই একাকী
পথের জীবন দেখে দেখে
প্রথম কবিতা ভালো লাগা।
এই সেই পথ মিছিলের
আঠারো বছর বয়সের
উত্তাল কন্ঠেতে তাকবীর,
জানি পথখানি সাক্ষী রবে
প্রতিবাদী ভাষা ছিল কন্ঠে।
এই সেই পথ, শহরের
যেমন গ্রামের পাশে নদী
দুই পারে জন সমাগম
সাধের সিঙাড়ার দোকান
পথ পাশে নেই তারা আজ
শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মল
দামী খাবারের ব্রান্ড শপ
একে একে বদলেছে কত।
এই সেই পথ, মনে পড়ে
পথ পাশে ছিল পাঠাগার
প্রিয় সেই ঘরের জীবন
তাকে তাকে নতুন পুরোনো
বইয়ের সারি সারি রেখা
দেখি সেই রেখাদের দাগ
আমার ভেতরে বইঘরে।
এই সেই পথ, আজো হাঁটি
কাজের ব্যস্ততা শেষে রোজ
হেঁটেছি দাদুর দেহ কাঁধে
পথের শেষেতে গোরস্থানে ।
এই সেই পথ, মানুষের
নিথর নিরব ফিরে যাব
পথ স্মৃতি যত রেখে যাব
ধুলায় মিলাবে পথ পাশে।