মায়ের কোলে যখন এলে
রূপের ছটা নিয়ে
ভরিয়ে দিতো এসে সবাই ভালোবেসে
আদর সোহাগ দিয়ে।
কাছের শিশু সব করতো কলরব
তোমার সঙ্গ পেতে
যেমন ফুটলে ফুল বনের অলিকুল
ছুটে আসে মেতে।
পিতার সাথে ছিল না আড়ি
তুমি যে তার রাজকুমারী
মাতার নয়নমনি
এমনি করেই ধীরে ধীরে
শৈশব কৈশোর পেরিয়ে
যৌবনে হলে রূপের রানী ।
নদীর তটে কিবা স্নানের ঘটে
তুমি কিন্নরী রূপসী মায়াবিনী
তোমায় দেখে জ্বলে ঈর্ষানলে
রূপসী হয়েও জলের কুমুদিনী।
পদ্ম আখির কুহকপাশে
আর স্বর্ণ তনুর স্পর্শ আশে
হাহুতাশ কতনা হিয়ার ;
সিংহ পুরুষ কত ত্যাজি পৌরুষ
তব রূপ অগ্নি দগ্ধ আর্ত নিঃশর্ত
চেয়েছিলো হতে পোষা মার্জার।
প্রেমসিক্ত আখির অনঙ্গ বান
কম্পিত বক্ষে সলজ্জ অবগুন্ঠন
স্বপ্ন মধুর রাতে কাতর কামনাতে
প্রণয়ীর হৃদয় নিমেষে করেছো লুন্ঠন।
রূপের লাবণ্য তনুর তারুণ্য
আর মুখের মায়াবী হাসি
সময়ের তরে নিঃশব্দ ঝরে
অজান্তে হয়ে যায় প্রবাসী।
যৌবন গেলে অস্তাচলে কুহকিনী আঁখি
পলিত আননে যেন অর্ধরাতে বাতি
উৎসব শেষে কেউ ফিরে দেখেনা এসে
নিভু নিভু প্রদীপ জ্বলিয়া সারারাতি।
যে রূপসী ছিল কারো প্রেয়সী
কিবা পিতার হৃদয় নন্দিনী
আজ ঘরে তার কেই নেই ডাকিবার
জীবন সায়াহ্নে সেজে একাকিনী।
গৃহের অরুন্ধুতি তুমিতো ছিলে মা
দুঃখ বেদনার মাঝে গৃহজ্যোৎস্না
তিলোত্তমা সবার মন কুমুদিনী
সহিয়া সব বেদনা অকাতরে বিলায়েছ হাসি
জীবনের শেষে জীর্ণ দেহে হারায়েছে রূপরাশি
বসন্ত শেষে যেন বৈশাখী মেদিনী।
সূর্যের আলোক বিলায়ে হয় নিঃশেষিত
উজ্জ্বল তারকা হয় বিবর্ণ অর্ধমৃত
মাগো তুমি ছিলে একদিন রূপসী সুহাসিনী
আজ স্বেচ্ছায় হয়েছে আধার গৃহকোণবাসিনী।
23/4/24