তোমার শহরে প্রথম যখন পা দিয়েছিল রঞ্জা, তুমি মহাভারতের মত দিস্তা দিস্তা চিঠি লিখেছিলে। এখন  রঞ্জা তোমার শহরে বাজার করে, রেশন তোলে, ট্রামে বাসে ঘুরে অফিস করে, তুমি সাবলীল  তাকিয়ে থাকো নিজস্ব ল্যাপটপ এর নীল আলোয়। টপাটপ চলতে থাকে কেজো আঙুল। রঞ্জা উলটে পালটে দেখে সেই চিঠিগুলো। খুঁজতে থাকে নিজেকে। কি ছিল ওর মধ্যে যা আজ নেই?

তিস্তা পাড়ের মেয়ে বলেই কি এত কল্পনায়  চিঠি লিখেছিল অনি? আজ সে কলকাতার স্থায়ী বাসিন্দা বলেই কি আর চিঠি আসেনা ওর নামে? তিস্তার কি আলাদা কোন গন্ধ ছিল, স্বাদ ছিল, ওর শরীরে ওর আত্মায়? যা এ শহর কেড়ে নিয়েছে?

হো হো করে হেসে ওঠে রঞ্জা, একাই ফ্ল্যাটের জানলা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। কি হদ্দ বোকা সে। সাদা কে সাদা ভাবতে শেখেনি আজও। এ পৃথিবীর সকল ভালো সকল স্ব স্ব মহিমায় উদ্বেলিত  উজ্জিবীত, এ ধারণায়, এমন দিস্তা দিস্তা চিঠির ভাষাকে বুকে আঁকড়ে একদিন এসেছিল তিস্তা পাড় ছেড়ে, অনির আরো কাছাকাছি থাকতে। বোঝেনি অনি ওকে ভালবাসেনি, ওর তিস্তাপাড়ের বাসা, সেখানের কুলকুল শব্দে বয়ে চলা ঝরনা, নিটোল নুড়ি দিয়ে গাঁথা রাস্তা সমেত রঞ্জা কে চেয়েছিল।

শ্রী