গাব গাছটা স্টেশনের চেয়ে বয়সে দু বছর ছোট!
কবেকার এক বন্যার মৌসুমে,
এক মেয়ের হাফ- টিকেট কাটতে এসে,
কেউ একজন গাছটা লাগিয়ে গেছে!
তখন থেকেই গাব গাছ টার সাথে স্টেশনের পরিচয়!
জং ধরা শরীর নিয়ে সে এখনো এই স্টেশনের একমাত্র দারোয়ান।
স্টেশন টা ফাকাই পড়ে থাকে,
অগ্রীম বুকিং পেলে ট্রেন থামে!
যাত্রীসংখ্যার নির্দিষ্টতা নেই,
কোনদিন দুইজন, কোনদিন একজন, কোনদিন এই স্টেশনে ট্রেন থামেই না।
কোনদিন আবার সংখ্যা অনেক বেশী।
টিকেট এর বিভিন্ন শ্রেনী আছে,
বয়স্করা পায় ফুল টিকেট,
আর এক থেকে ত্রিশ বছর বয়সী দের হাফ টিকেট!
এই স্টেশনের টিকেট কালোবাজারি হয় না,
একবার টিকেট ইস্যু হলে,
ভ্রমণের সময় পিছানো যায় না!
টিকেট বাতিলের সুযোগ ও নেই!
তবুও সবাই অপেক্ষা করে টিকেটের জন্য!
সবাইকে অপেক্ষা করতে হয়!
জং ধরা গাব গাছটাও টিকেটের জন্য বহু বছর অপেক্ষা করছে!
সবাই অপেক্ষা করে,
সবাইকে অপেক্ষা করতে হয়!
কেউ কেউ অপেক্ষা করতে করতে ভুলে যায়,
হঠাৎ টিকেট ইস্যু হয়ে চলে আসে!
কেউ তাড়াহুড়োয় চলে যায়,
কেউ সব গুছিয়ে!
স্টেশন টার নাম,
এই এলাকার লোকে দিয়েছে ' খালিশপুর গোরস্থান '!
এখান থেকে এই এলাকার অসীমের ট্রেন ছাড়ে!
কোন যাত্রীই জানে না গন্তব্য কোথায়!
শুধু ভবিষ্যতের কোন যাত্রী ঘুরতে এলে,
স্টেশন অতীতের যাত্রীদের অনুভব এর স্পর্শ দেয়,
গন্ধ রূপে দেয় কিছু স্মৃতি!
একে একে ভবিষ্যতের যাত্রীরাও অতীত হয়ে যায়,
শুধু বর্তমানে থেকে যায় স্টেশন।
এই শহরে এমন বহু স্টেশন আছে,
সব স্টেশনেই ওই একটাই ট্রেন আসে!
সব স্টেশন ই প্রতিটি যাত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেয়,
আজ বাদে কাল তোমাকেও উঠতে হবে এই ট্রেনে অন্তিম চিরনিদ্রায়!