ব্যবহার নামে যে ধর্ম,
সেখান থেকেই আমার জন্ম,
আমার সৃষ্টি শুধুই ব্যবহারের জন্য।
আমার আক্ষেপ নেই বিন্দুমাত্র তাতে,
আমি বরং খুশী এই ব্যবহারে।
একটার উপর একটা খণ্ড জোড়া দিয়ে,
দিয়েছ গতি।
ছুটে চলা আমার কাজ, আমি রোজ ছুটে চলি
ছুটে চলতে চলতে পেয়ে যাই অনেক গল্প,
আজ সে গল্পের বলব খুব সামান্যই, একদম অল্প।
আমার বুকে যে বিশাল গর্তে তোমাদের জায়গা দেই,
আমি নির্জীব তবুও সেখানেই,
ভালোবাসা,অভিমান, আর ঘৃনার স্পর্শ পাই।
এই ধর অফিস শেষে ক্লান্ত বেশে,
যখন কেউ মাথা রাখে আমার বুকে।
কিংবা স্কুল ফেরত সেই ছোট্ট বাচ্চা টা যখন আসে,
আবার ধর সেই থুরথুরে বুড়ো বুড়ি যখন হাত ধরে থাকে,
আমার এই জড় জন্ম সার্থক তায় হাসে।
আমার বুকেই কত প্রেম, কত হাসি আর কান্নার গল্প! আমি আনমনে ভাবি,
শুধু দেখে যাই , বলতে পারি না, আমি তো নই কোন কবি।
মাঝে মাঝে আমার খুব মন খারাপ হয়,
যখন আমার বুকে কেউ তার সবকিছুই হারায়,
অথবা যখন আমার হাতল ধরে এক গর্ভবতী দাঁড়ায়।
অথচ পাশেই পায়ের উপর পা তুলে,
সুস্থ তোমরা আছ বসে।
আমার ঘেন্না হয় প্রচণ্ড,
যখন দেখি হাজারো হাতের ভিরে এক প্রকাণ্ড
কালো হাত, সুযোগ পেয়ে নিজের লিপ্সা করছে চরিতার্থ।
তখন আমার ইচ্ছে হয় সব পিষে ফেলি,
আমার রক্ত ডিজেল এ পুড়িয়ে মারি।
যখন বিনে কারণে আমার বুকে আগুন দাও,
আমাকে ওই সম্ভাবনাময় প্রাণ গুলোর খুনী বানাও,
আমার দোষ কি শুনি? তোমরাই ত আমাকে চালাও!
আমার তখন ইচ্ছে হয় চিৎকার করে বলি,
সেদিন তোমরা কোথায় ছিলে ?
কোথায় ছিল তোমাদের এত সাহস, এত শৈর্য্য,
যখন আমার বুকে লেপ্টেছিল ওই কাপুষের বীর্য!
বাহ! বাহ! বাহ! তোমাদের, এত ধৈর্য!
সেদিন তোমরা কোথায় ছিলে?
যেদিন ওই নাম না জানা মেয়েটার প্রচণ্ড চিৎকারে।
আমার এই লোহার শরীরেও কম্পন ধরেছিল,
কাপুরুষ গুলোকে আমার মেরে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিল!
অথচ সেদিন তোমরা চুপ ছিলে, এত কিছু দেখেও!
তোমাদের বোধহয় খুব ভালো লাগে।
ধর্ষন নামের এই গল্পগুলো শুনতে!
তোমরা বোধ হয় পাও আনন্দ,
নাহলে বোধহয় হও রোমাঞ্চিত!
আচ্ছা, তোমরা কি এক বারো হও না লজ্জিত?
লজ্জিত যদি হও ই, তাহলে তোমাদের এই শহরে,
কিভাবে ওই কাপুরুষেরা রোজ সদর্পে হাটে।
ওরা ভালোই থাকে, ভালো পরে, খায়ও ভালো
শুধু ভালো থাকে না ওই পরিবার আর মানুষগুলো,
আর আমার মতো নির্জীব সাক্ষী যতো।
আমি আবার হাটি, আবার থামি যখন তোমারা ডাক"এই বাস, এই বাস "
শুধু কালো ধোয়ার আড়ালে দেখতে পাও না আমার দীর্ঘ এক দীর্ঘনিঃশ্বাস।