হয়তো তার কাছে প্রস্ফুটিত কালো গোলাপ ছিল
কিংবা গোলাপ কলি, যার অন্তরে কালো পাপড়ি ছিল
কালো চাঁদের আলোয় কি তার অন্তর মেলতো
কিংবা ছিল কোন এক গ্রন্থের নায়িকা? জানা নেই!
কিন্তু তার দু'টি চোখে কাজল রেখা ছিল —
মাটিতে তার পা আলতো রেখা আঁকতো —
এক পায়ে নূপুর ছিল কি না কেউ বলতে পারেনি
তবে অনেকে বলতো, কালো চাঁদের সময় রিনি ঝিনি শব্দ ভাসতো
আমরা তর্কে মেতে উঠি, নূপুরের শব্দ না চুড়ির
তাকে কেউ দেখেনি, আমি শুনতে শুনতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ি।
আমি কালো চাঁদের ঝুম অন্ধকারের জন্য অপেক্ষা করি।
কিন্তু কত বছর সে অপেক্ষার প্রহর ? ঠিক জানা নেই।
রজনী দ্বিপ্রহরে নিভু নিভু কুপির আলোয়, দাদী বলেছিল —
জানিস, তার পরনে সাদা শাড়ীর সাথে নীল পাড় ছিল—
আলোহীন বিভাবরীতে কেউ কেউ তাকে দেখেছিল—
পুকুর পাড়ে একাকী বসে থাকতে, কালো গোলাপ হাতে।
দাদীর ঘোলা চোখে, চোখ রেখে-আজো আমি তার কথা শুনতে চাই
সে কি হারিয়ে যাওয়া নীল চাষীর রূপসী কোন কন্যা-নীলা
নাকি সতীদাহ প্রথার শেষ চিতায় ওঠা- কালিনী ? জানি না।
আমি মনে মনে হাতড়ে খুঁজে ফিরি তাকে, আমার রক্তে যে
কালো চাঁদের কালো রক্ত বহে, প্রক্ষালিত করতে চাই লাল গোলাপে।
আমার যে এখনও কালো চাঁদ দেখা হলো না —
একঘেয়ে জ্যোৎস্না আর মনোরঞ্জন করে না, কালো চাঁদ দেখতে মন চায়।
আমি তার মনে সুপ্ত লাল গোলাপের কলি কিংবা প্রস্ফুটিত লাল গোলাপ দেখতে চাই,
আমি কি কালো চাঁদের অপেক্ষায় — বাকী জীবন — তার অপেক্ষায় পার করে দিব?