ভবঘুরে হয়ে ঘুরে
পথে পথে তাই,
হয়নি নেয়া যত্ন দেহে  -  
চেনার সাধ্য নাই।

এমনি করে একে একে
চারটি বছর গেলো,
হারাল নদীর মাঝি আবার
ঘাটে ফিরে এল।

জবুথবু এলোমেলো
মলিন মুখটি দেখে,
জিজ্ঞাসে সে অন্য জনে  
চিনতে পার এ-কে?

ও যে মাঝি ভাই...এদিক এস...
বলল, কেমন আছ?  

মনেপড়ে, এই ঘাটে সেই
প্রথম দেখার পরে,
কইনো কথা রাজকুমারির
খবর নেবার তরে?

বল কি গো সোনার ছেলের
এই হয়েছে দশা!
...তখন থকেই নিভল প্রদীপ
মিটল সকল আশা।  

আমায় কি ভাই সঙ্গে নেবে
ও মাঝি ভাই শোন,
জীবন বেলা সাঙ্গ হলো
বাঁচব না আর যেন।

নিথর দেহ পৌঁছে দিও
কষ্ট করে তারে,
কবর দেবার আগে যেন
আমায় দেখতে পারে।

ধীরে ধীরে জীবন প্রদীপ
যাচ্ছে যেন মিশে,
সইল না আর জীবন দহন
বেঁচে থাকার দিশে।

হারাল পারের মেয়ে হারিয়ে
প্রহর কেবল গুনত,
ভবলিলা সাঙ্গ হবে
তাই যেন সে ভাবত।  

হয়তো মাঝির অপেক্ষাতেই
ক’দিন বেঁচে ছিল,
মাঝি ভাইয়ের নায়ে চড়েই
ওপার পাড়ি দিল।

(সমাপ্ত)