মাঝেমাঝে আমার বড্ড ইচ্ছে হয়
এই পৃথিবীর এক আলোকবর্ষ দূরের কোনো
সুবিস্তীর্ণ অকৃত্রিম আলো-আঁধারের স্টেশনে,
নিজের নির্জন-নীল অস্তিত্বটাকে নোঙর করি!
মুমূর্ষু নিজেকে আড়াল করে ফেলি
যান্ত্রিক কোলাহলপূর্ণ উচ্ছলতার
আভিধানিক শহর থেকে!

দূরত্ব নিয়ে এতটা ভীষণ পথ চলি
যতটা দূরে গেলে মানুষের সামাজিক মৃত্যু হয়!
যতটা দূরত্বের পরিসীমায় মানুষের ইহজাগতিক
বোঝাপড়া বন্ধ হয় নিঃসঙ্গ-নীরবতার একদফা দাবিতে!

অতঃপর, নিভৃতে আপন করে নিই:
কমফোর্ট নিঃসঙ্গজোন,
জনশূন্য নিস্তব্ধ দুর্গম রাত,
সুবহে সাদিকে নৈঃশব্দতার সাইরেন,
পাখিদের কুঞ্জবনে কল্লোলিত ঝিলের ধার,
হিমেল বাতাসে বোতাম খুলে হাঁটা বুকপাঁজর,
বেলা গড়ালেই রৌদ্র পোহানো নিকুঞ্জ মধুবন,
দুপুরের বসে থাকা শান্ত নদীর জলে পা,
ধূসর গাঙচিলের পায়ে নিগৃহীত রাজপুঁটি,
বিকেলের কোলাহলশূন্য সোজন বাদিয়ার ঘাট,
সন্ধ্যার দাবানলে নেমে আসা নিশ্চল অন্ধকার,
রাত কাটানো মানববসতিশূন্য আদুল গ্রাম,
গুমড়ো মেঘের আড়ালে মুখ ঢাকা চাঁদের চর্যাপদ,
দু'চোখ দিয়ে অপলক তাকিয়ে থাকা পার্বত্য মহাকাশ,
নিঃশব্দে নিউরনে জাগ্রত হওয়া অপার্থিব আকাঙ্খা!

ক্লান্তিতে হঠাৎ দু'চোখ বন্ধ হয়ে এলে, তারপর -
মেঘাদ্র বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা শরীরে নিজেকে হারাই!
ঝড়ের আঘাতে স্পন্দিত এ্যাডভেঞ্চারাল ফেনোমেনা!
চুল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে বৃষ্টির আধফোটা একেকটা হরফ;
বৃষ্টিভেজা আষাঢ়ের শেষ কবে বসে থাকা অচঞ্চল মন।
শৈশবে বাবার বুকে শব্দহীনভাবে ঘুমিয়ে যাওয়া নরম
শিশুর মতো; সুপ্রশান্তি নিয়ে উদ্ভট-প্রশস্ত খোলা আকাশের
নিচে ঘাসের গায়ে বুক জড়িয়ে নিশ্চুপ ঘুমিয়ে যাওয়া
আট-দশঘন্টা সময়। কত্ত কিছুই না ইচ্ছে করে!
মাঝেমধ্যে আমার কতকিছুই না ইচ্ছে করে!!