এতাবৎ চরম বিষাদযাপিত জীবনের দুঃসময় ঘুচবে!
সুখের সুতীব্র আঙিনাজুড়ে একদিন স্নিগ্ধ রুপোলী আলো প্রস্ফুটিত হবে। কদাকার নিজের ভেতর হা-হুতাশ বয়ে বেড়ানো প্রতিকূল পৃথিবী হবে ফুলকাননের নিষিক্ত রক্তজবা! সংকটের মানবজমিনে বিস্বাদিত অন্ধকার হবে কবেকার পুরনো একটা অতীত! সুসময়ের সুদীপ্ত আলোর বুদ্বুদে প্রোজ্জ্বল তারকারাজি আকাশে ঝিলিমিলি করবে!
নিজের ভেতর আত্মহারা হৃদয় চরম উল্লাসে মেতে উঠবে সফলতার অভীষ্ট লাল মুকুটের গর্বে!
কুসুম রোদের ঝলকানিতে ঘুমিয়ে থাকা
রাতের উন্মীলিত পুবাকাশও ঢের জেগে ওঠবে।
সুদীর্ঘ, ভয়ংকর, ঘোর রজনী পোহালে পৃথিবী জানে
শুভ্র, স্নিগ্ধ, অসীম ভোরের চিরন্তন সাক্ষাতের কথা!
রবের দিকে ফেরার নৈঃশব্দ্য আজানে মুসাফির ফের
দাঁড়াবে অনুতপ্তের নরম জায়নামাজে; নীল জীবনের
পাতায় পাতায় বিভ্রাট অনুশোচিত পরমাত্মা নির্জনে
লুটিয়ে পড়বে সাহু সিজদায়! অনন্তর হেদায়েতের
প্রথম সুবহে সাদিকে, সোনালী আলোর জোয়ার
দিলের উঠোনের চারিধার নির্মম প্লাবিত করবে।
জৌলুস জলোচ্ছ্বাসে বিতাড়িত অন্ধকার খুঁজবে
পরিত্যক্ত পথের একটা সাইক্লোন সেন্টার!
গুনাহের দাপটে অযত্নে প্রতিপালিত
জাহান্নামের ছোট ছোট অগ্নি উপকূল ভাটির স্রোতে
ভেসে সাগর-গভীরতায় নিলীন হবে! জশনে-জাদুর
পূর্ণিমা লেগে যাবে উদ্ভাসিত আকাশের প্রতিটি ভাঁজে ভাঁজে। আলোর ভূপৃষ্ঠে খরস্রোতা হয়ে ভাসবে নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা পাপিষ্ঠ মানবের বৈশিষ্ট্য,
নিকৃষ্ট আজাজিল আর অমানুষিক অস্তিত্বশীল সকল
মিশ্র অন্যায়!
অনুতপ্ত হৃদয় ভার হয়ে নুয়ে নুয়ে পড়বে অশ্রুস্নাত
পদ্মপরাগের শাখায়। বৃষ্টির ফরেনসিক রিপোর্ট
অনুসারে ভারাক্রান্ত চোখের নদী হবে মেঘের
উড়ন্ত জলীয়বাষ্প! আরশে আজিমের দরবারে
ক্ষমা-কামনার বিশুদ্ধ চিঠিটি বারবার ভিজে
যাবে অশ্রুসিক্ত চোখের অনবরত ফোঁটায়!
পরম ক্ষমাশীল রহমানের রহমে, নতুন দিগন্তে
এক বিস্তৃত সিরাতাল মুস্তাকিমের সবুজ বসতি
নির্মাণ হবে! সূর্যমুখী, হাসনাহেনা, বেলি ফুলে ফুলে
ভরে যাবে উদয়াচল লতাগুল্ম, বৃক্ষরাজি। ক্ষমার আরশ থেকে প্রবাহিত শোঁ-শোঁ শব্দের লিলুয়া বাতাস বইবে শান্ত নদীর জলধারার মতো! আদিম মালভূমির এক পরিযায়ী পাখি সন্ধ্যেলগ্নে আবিষ্কার করবে মুক্তির মাঠের কেতাদুরস্ত সবুজঘরটি! আমি হব সে ঘরের অমিশ্রিত, সুনির্মল, পরিশুদ্ধ বাসিন্দা।
আজরাইলের ডানায় আরশে আজিম থেকে ক্ষমা মঞ্জুরের কাঙ্ক্ষিত চিঠি এলে, পবিত্র সবুজঘরের শেষ দাওয়ায় শীতল পাটির বিছানায় ধীর কোমল হয়ে শুয়ে যাব! গায়ে জড়ানো মৃদুমন্দ বাতাস আর জানালায় ঝলকিত মিটিমিটি আলোর আহ্লাদে অঙ্কুরিত উষার অপরূপ, সফেদ তুলতুলে স্নিগ্ধকোলে; কালেমা উচ্চারণের পর আমার পলেস্তারা জীবনের অন্তিমতার পবিত্র আয়োজন হবে; হোক!