সে আসুক— খরস্রোতা পূর্ণিমা রাতে আকাশের একফালি হালাল চাঁদ হয়ে, তাহাজ্জুদের নীরব কান্নায় ভেজা চোখের পাতার মতো মাতৃসম আশীর্বাদের অবিশ্বাস্য স্নেহধারায়! চাহনিতে ফুটুক দিগন্তপ্রসারী আল আরাফার প্রশান্তি, চির পুণ্যেয় ক্বাবার গাঢ় আলো —যে সৌম্য-সুস্নিগ্ধ আলো আমাকে প্রতিনিয়ত উদ্ভাসিত করবে!
সে আসুক— কোনো এক বকুল সন্ধ্যেবেলায় হৃদয়ের মাধুরী ছড়িয়ে, মধুপুষ্প স্নিগ্ধতায় ভরিয়ে দেবে নিঃসঙ্গ ঘাসফড়িংয়ের এটুকু ঘর-সংসার! প্রেমসাম্রাজ্যের হালাল শাখায় ফুটবে ভালোবাসার মালতী, রজনীগন্ধা, পদ্ম, গোলাপ, হাসনাহেনা!
তাঁর চোখের ভেতর যেন একটি সুরম্য কাঁচের বাগান, বাগানের প্রতিটি ফুলের পাপড়ি যেন সুস্ময় মায়াবতী হরিণ! মুখে জুঁই ফুলের অনাবিল হাসি— হাসির প্রতিটি ঝলক যেন আখেরাতের রোদেলা সোনালি প্রভাত! মায়াময় মধুর চাহনি যেন নীল আসমানী রোদ— হিম রোদের লাবণ্যময় স্পর্শ আমাকে মানসিক শান্তি দেবে; উষ্ণ উদারতায় আমার উজবুক নিঃসঙ্গতার আদি-মলিনতা দূর করবে!
হঠাৎ এক নীরব চুপচাপ রাতে; ধরো কোথাও কেউ নেই! এমনকি নেই সুরাঙ্গনা পাখির কলকাকলিত উদাত্ত একতিল জমিন! এই খোলা আকাশের নীচে— এই হিমাদ্রিসম নীরবতার কোমল তলে— এক হলদে চাঁদের আলোকিত পথে আমরা দু'জন হাঁটছি একে অপরের সখ্যতায়! যেন সুনসান দূরে কোথাও জান্নাতের এক নদী বয়ে যায়। ঘন কুয়াশার রাতে— সেই সুরম্য নদীর তীরে আমি আর তুমি বসে আছি এক নিরবিচ্ছিন্ন শান্ত কোমল জলধারায়!
সে আসুক— এক সুফলা তেঁতুল গাছের গোড়ায়, যার পরম ছায়ায় মায়া মায়া লাগবে দূরে যেতে! বৃক্ষের শিকড় যেমন প্রগাঢ় প্রবলতায় ধরে রাখে মাটির মজ্জা— তেমনি শেকড়ের মতো এই অগোছালো আমাকে —ধরে রাখবে জীবনের প্রতিটি সুখেদুখে, সুসময়ে-দুঃসময়ে, ঝড়ঝাপটায়-উল্লাসপ্রবণতায়!